Logo
Logo
×

জাতীয়

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিবৃতি

সড়কে ৯ মাসে ঝরেছে সাড়ে ৫ হাজার প্রাণ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম

সড়কে ৯ মাসে ঝরেছে সাড়ে ৫ হাজার প্রাণ

চলতি বছরের ৯ মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের। আর আহত হয়েছেন সাড়ে ৯ হাজারের বেশি মানুষ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৪৮৫টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৯৮ জন এবং আহত ৯ হাজার ৬০১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন ও শিশু ৭২৯ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এক হাজার ৯২৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ সময়ে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী এক হাজার ৯২৪ জন (৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ), বাসযাত্রী ২৯৩ জন (৫ দশমিক ২৩ শতাংশ), পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ইত্যাদি) ৪২০ জন (৭ দশমিক ৫০ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ আরোহী ২৯৫ জন (৫ দশমিক ২৬ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি এক হাজার ৯৭ জন (১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহেন্দ্র-টমটম) ২৭৮ জন (৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৭০ জন (৩ দশমিক ০৩ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এক হাজার ৮৪৯টি (৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, দুই হাজার ১৩৪টি (৩৮ দশমিক ৯০ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৭১টি (১৪ দশমিক ৫ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৬৭০টি (১২ দশমিক ২১ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬১টি (১ দশমিক ১১ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসাবে বলা হয়েছেÑত্র“টিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা এবং চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; সড়ক এবং সড়ক পরিবহণ নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি।

সুপারিশ হিসাবে বলা হয়েছে, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে। বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবহণ মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে। পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে। সড়ক এবং সড়ক পরিবহণ নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব হওয়া জরুরি। গণপরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহণ কৌশল প্রণয়ন করতে হবে; সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম