জুলাই আন্দোলনের বিরোধীদের বেসিসের নেতৃত্ব থেকে অপসারণের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৩ পিএম
আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে গুম, খুন, দুর্নীতি ও লুটপাটের সহযোগী, অর্থের যোগানদাতা ও জুলাই আন্দোলনের প্রত্যক্ষ বিরোধিতাকারীদের অবিলম্বে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) নির্বাহী কমিটির পদ থেকে অপসারণসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বেসিস সংস্কার পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সংস্কার পরিষদের সদস্য ও ইনফোব্যান রিয়েলম আইটি সলিউশনেরা মুখপাত্র ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিতর্কিত বেসিস নির্বাচনে সব ক'টি প্যানেলই সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান ও জুনায়েদ আহমেদ পলকের ইচ্ছানুসারে স্বেচ্ছাচারী পন্থায় চাপানো ছিল। এমনকি অনৈতিকভাবে নির্বাচনে জিততে তারা নির্বাচনের আগে প্রক্সি ভোটার তৈরি করার পাশাপাশি বৈধ সদস্যদের ভোটার হতে বাধা দিয়েছে নজীরবিহীন উপায়ে।
ফলে ২৬০০ সদস্যের বেসিসে সর্বোচ্চ ৯০০ জন ভোটার হতে পেরেছিল। ভিন্নমতের সদস্যদের ভোট থেকে বিরত রাখতেই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়। এছাড়াও অভিযোগ আছে, এসব নির্বাচনে প্রায় সকল প্যানেলই সরকারের মদদপুষ্ট ছিল, যারা বিভিন্ন পার্টি ও ইভেন্টের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে, যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দুর্নীতি ঢাকতে নির্বাচনের আগে অবৈধ পন্থায় অডিটর বদল করা হয়েছে। এমনকি বেসিসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে অভিযোগ মুছে দেওয়া, ক্লোজড গ্রুপে পোষ্ট এপ্রুভাল সিস্টেম চালু করা এবং সমালোচনামুলক পোস্ট এপ্রুভ না করা/দেরি করার অভিযোগ আছে। নির্বাহী কমিটির বাইরে বেসিস স্টাফদেরকে দিয়ে এসব অপকর্ম করানোর অভিযোগও আছে, যা সদস্যদের জন্য অসম্মানজনক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো বেসিসে বীরদর্পে অপকর্ম করেই যাচ্ছে। বেসিসের বর্তমান এক্সিকিউটিভ কমিটির (ইসি) অনেক সদস্যের দুর্নীতি ও অপকর্মের সংবাদ মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে অনেকবার প্রকাশিত হলেও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে সক্রিয় রয়েছে।
বেসিস সংস্কারে তাদের দাবির মধ্যে বর্তমান নির্বাহী কমিটির সকলকে পদত্যাগ করা, নিরপেক্ষভাবে বর্তমান সদস্যদের প্রকৃত যোগ্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক ভুয়া/প্রক্সি সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল করা, বিগত বছরগুলোতে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সদস্যপদ নবায়ন করতে না পারাদের ব্যবসায় ফিরে আসতে সার্বিক সহায়তা, প্রেসিডেন্টস ফোরাম নামক স্বেচ্ছাচারী প্ল্যাটফর্মের অবসান করা, বেসিস গঠনতন্ত্র পুনর্গঠন করে এতে বিদ্যমান সুস্পষ্ট বৈষম্য দূর করা, একটি নিরপেক্ষ সংস্কার কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বেসিসের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা, ছাত্রদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে ছাত্র-তরুণদের গুরুত্ব দিতে বেসিসের বর্তমান স্টুডেন্ট বডিকে প্রকৃত অর্থে সক্রিয় করতে হবে, যেন তারা উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে বা প্রযুক্তিবিদ হিসেবে এই শিল্পে নেতৃত্ব দিতে পারে এবং ইসি সদস্যদের একমাত্র কাজ সদস্যদের স্বার্থ দেখা, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কারো পক্ষে কাজ করা নয়- সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এটি নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এইচআরএসওএফটিবিডির সিইও এ এইচ এম রোকনুজ্জামান রনি, মো. মিজানুর রহমান, মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।