সারা দেশে এই মুহুর্তে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন এই নারী। এ ঘটনায় প্রথমে তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঊর্মিকে ওএসডি করার প্রতিবাদে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পটুয়াখালী-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। এরপরই নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি।
রনি ওই পোস্টে বলেন, তাবাসসুম ঊর্মিকে কেন ওএসডি করা হলো!
তিনি বলেন, একজন নবীন সরকারি কর্মকর্তার একান্ত ব্যক্তিগত একটি কথা যারা হজম করতে পারেন না তারা কিসের রাষ্ট্র সংস্কার করবেন! কিসের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন!
ওই পোস্ট করে কমেন্টবক্সে রোষানলের মুখে পড়েছেন রনি। মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, আপনিও যে স্বৈরাচার ও গণহত্যাকারীদের দোসর তা আর বুঝতে বাকি রইল না।
আব্দুল আউয়াল লিখেছেন, স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে আপনি তো আপনার আসল রূপ প্রকাশ করে দিলেন।
আসাদুজ্জামান লিংকন লিখেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে কোনো আমলা এরকম পোস্ট দিলে চাকরিই থাকতো না। তারপর পরিবার নিয়ে বসবাস করাই কঠিন হতো। এ দেশে ফেসবুকে পোস্ট করার অপরাধে অনেকেরই চাকরি গেছে।
পারভেজ রহমান লিখেছেন, শহীদ আবু সাঈদ কে সন্ত্রাসী বলার অপরাধী ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক!
নোমান আহমেদ লিখেছেন, আপনাকে অনেক জ্ঞানী হিসেবে জানতাম। ভুল ভাঙানোর জন্য ধন্যবাদ।
শনিবার নিজের ফেসবুকে তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি লেখেন, সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।
এর আগেও তাপসী তার ফেসবুকে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। তিনি রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করেও উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে প্রশাসনে বিতর্কের জন্ম দেন।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে কটূক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কটূক্তিকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ী বরখাস্ত না করা হলে ‘উত্তরবঙ্গ ব্লকেড’র হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।