শিল্পাচার্যের ‘শিরোনামহীন’ রেকর্ড দামে বিক্রি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের একটি চিত্রকর্ম যুক্তরাজ্যে নিলামে রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে।
এ চিত্রকর্মটি বৃহস্পতিবার নিলামে তোলে বিখ্যাত নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সদবি’স।
সেখানে ‘আধুনিক ও সমসাময়িক দক্ষিণ এশিয়ার আর্ট’ শিরোনামের ওই নিলামে ১৯৭০ সালে আঁকা ‘শিরোনামহীন’ চিত্রকর্মটি বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার পাউন্ডে।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার সমান।
এ চিত্রকর্মটি শিল্পী জয়নুল আবেদিনের পক্ষ থেকে চেদোমিল প্লাজেককে উপহার দেওয়া হয়েছিল।
তিনশ বছরের পুরনো নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সদবি’স বলছে, এ চিত্রকর্মটি শিল্পী এঁকেছেন কাগজের ওপর। কালো কালির রেখা ও ওয়াশে করা এই ছবিতে একজন মৃত মা ও শিশুর অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছেন এই শিল্পী।
‘শিরোনামহীন’ জয়নুলের ‘মনপুরা ৭০’ সিরিজের একটি চিত্রকর্ম। এই ছবিটি শিল্পাচার্য এঁকেছিলেন চর মনপুরায় ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর। ওই ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছিল লক্ষাধিক মানুষ।
সদবি’স তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, চিত্রকর্মটি চেদোমিল প্লাজেক নামে একজন যুগোস্লাভিয়ানকে উপহার দিয়েছিলেন শিল্পাচার্য।
প্লাজেক ঢাকায় জাতিসংঘের ভূগর্ভস্থ পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করতেন। আর ওই সময়ে জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে প্লাজেকের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাই প্লাজেককে এই শিল্পকর্মটি উপহার দেন জয়নুল।
তবে সদবি’স ক্রোয়েশিয়ার একটি ব্যক্তিগত সংগ্রহশালা থেকে ‘শিরোনামহীন’ সংগ্রহ করেছে।
এর আগে গত মার্চে নিউ ইয়র্কে জয়নুল আবেদিনের আরও দুটি চিত্রকর্ম নিলামে তুলেছিল সদবি’স।
সেগুলোর একটি ছিল শিল্পীর বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘সাঁওতাল দম্পতি’। ১৯৫১ সালে আঁকা ওই চিত্রকর্ম ৩ লাখ ৮১ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছিল ওই সময়।
এছাড়া জয়নুলের আঁকা বসে থাকা নারীর আরেকটি চিত্রকর্ম বিক্রি হয়েছিল ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪০০ ডলারে। সেটি জয়নুল এঁকেছিলেন ১৯৬৩ সালের দিকে।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলা আন্দোলনের পথিকৃৎ। শিল্পকলায় অবদানের জন্য তার জীবদ্দশায় তিনি পেয়েছেন শিল্পাচার্য খেতাব। চিত্রশিল্পও যে কোনো প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি বা প্রতিরোধের হাতিয়ার অথবা অধিকার-সাম্য-স্বাধীনতার ভাষা হতে পারে, তা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন দেখিয়েছেন।
১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া শিল্পাচার্য ফুসফুসে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন ১৯৭৬ সালের ২৮ মে।