ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। এতে বাদ যাচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম পদ্ধতি। আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য সৃজনশীল পদ্ধতির আলোকে বই তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরির কাজ করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হবে। এছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে আগের শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই তৈরি করা হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় দুই কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ৩৫ কোটি বই ছাপানো হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর সময় আছে মাত্র তিন মাস। এর মধ্যে সব বই ছাপিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে হবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বই ছাপানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এত বই ছাপিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছানোর বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে।
সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপানোর কাজ জুন-জুলাই থেকে শুরু হয়। এবার দেশে সরকার পরিবর্তনের কারণে তিন মাস দেরিতে এই কাজ শুরু করা হয়েছে। কাজেই বই পেতে দেরি হতে পারে। গত দুই বছর নতুন শিক্ষাক্রমের পাণ্ডুলিপি দেরিতে তৈরি করার কারণে শিক্ষার্থীরা একটু দেরিতে বই পেয়েছে। এবারও সব শিক্ষার্থী জানুয়ারিতে বই নাও পেতে পারে।
সূত্রটি জানায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য ১৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৭ টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের জন্য ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির) ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ২৫২টি দরপত্র জমা পড়ে।
ভারতে পাঠ্যবই ছাপানো টেন্ডার বাতিল : এবার ভারতীয় প্রতিষ্ঠান প্রিতম্বর বুকস প্রাইভেট লিমিটেড ও পাইওনিয়ার প্রিন্টার্সকে প্রায় ১ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেওয়া হয়েছিল। পরে দুই ভারতীয় প্রকাশককে দেওয়া ১৮টি লটের টেন্ডার বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন করে এই লটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়াম্যান অধ্যাপক একেএম রিয়াজুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, দেশীয় কোম্পানিকে কাজ দিতে ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানের ১৮টি লটের টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। আর মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো যেন সমানভাবে কাজ পায় সেই বিবেচনা করা হবে।