মোহাম্মদপুরে জোড়া খুন
শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালসহ ৩২ জনের নামে মামলা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ এএম
ইমামুল হাসন ওরফে পিচ্চি হেলাল। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় জোড়া খুনের ঘটনায় মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসন ওরফে পিচ্চি হেলালসহ ৩২ জনকে আসামি করে মামলা করেছে ভুক্তভোগী দুই পরিবার। এ ঘটনায় নিহত মুন্না হাওলাদার ও নাসির বিশ্বাসের পরিবার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।
এ দুটি মামলায় মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা ইমন ওরফে এলেক্স ইমনসহ আরও ৩০ কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যকে আসামি করে মামলা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার আজিজ খান রোড এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় মুন্না হাওলাদার (২২) ও নাছির বিশ্বাস (২৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এছাড়াও বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, রায়ের বাজার এলাকার কিশোর গ্যাং চক্রের মূলহোতা ইমন ওরফে এলেক্স ইমনের নেতৃত্বে সানী, পারভেজ ও রাজিবসহ আরও ৪০-৫০ জন সদস্য দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এসে আতর্কিত হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন মারা যায়। বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় আশপাশে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে তাদের মোবাইল, টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এলেক্স ইমন স্থানীয় পুলিশ ও র্যাবের সোর্স হিসেবে পরিচিত হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
নিহত মুন্না হাওলাদারের স্ত্রী সিমু আক্তার জানান, গতকাল সন্ধ্যায় আমার স্বামী বাসার সামনে বের হলে এলেক্স ইমন,পারভেজসহ ৪০-৫০ জনের একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ এসে আকস্মিকভাবে হামলা করে। এ সময় আমার স্বামীর পুরো শরীরের রগ কেটে দিয়ে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই আমার স্বামীকে মেরে ফেলে। নাছির বিশ্বাস নামে আরেকজনকে কুপিয়ে মেরে ফেলে। তাদের প্রতিহত করতে আশপাশের লোকজন ছুটে গেলে তাদের ওপর হামলা করে তাদেরকে কুপিয়ে আহত করে। আমি আমার ছোট শিশু বাচ্চাকে নিয়ে কার কাছে যাবো এখন। আমার স্বামীকে হত্যার বিচারের জন্য আমার জীবন দিয়ে দিবো। এরপরও আমার স্বামীকে হত্যার বিচার চাই আমি।
মুন্না হাওলাদের বাবা বাবুল মিয়া জানান, আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খবর পাই আমাকে ছেলেকে একদল কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। এ খবর শুনার সঙ্গে সঙ্গে আমি ঘটনাস্থলে কোনমতে দৌঁড়ে আসি। এসে দেখি আমার বুকের ধর ছেলেটা আর নেই। আমার ছেলে দেড় বছর বয়সি একটি সন্তান রেখে গেছে। ছোট্ট এই অবুঝ শিশুর খবর কে নিবে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী ইফতেখার জানান, কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় দুইজন মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারবো।