Logo
Logo
×

জাতীয়

লুটপাট করেছে এক লাখ কোটি টাকা

বাংলাদেশের নাগরিকত্বই ছিল না এস আলম পরিবারের সদস্যদের

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৬ এএম

বাংলাদেশের নাগরিকত্বই ছিল না এস আলম পরিবারের সদস্যদের

শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাইফুল আলম। এ সময় গণভবনে তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন এস আলম গ্রুপের পরিচালক ও তার পুত্রদ্বয় আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম এবং ইউনিটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ। পুরোনো ছবি।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের মাফিয়া এস আলম গ্রুপ। হাসিনা সরকারের সঙ্গে কাজ করে লুটপাট করেছে দেশের একের পর এক ব্যাংক। নামে বেনামে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। সোমবার একটি পত্রিকায় ‌‘এস আলম সপরিবারে ছাড়েন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয় একটি জাতীয় পত্রিকায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর সপরিবারে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রত্যাহার করেন এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহির। একই দিন বিদেশি নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সিয়াল) অনুমোদন পায় পরিবারটি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এসব সুবিধা দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অর্থ পাচারের পথ সহজ করা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জবাবদিহি এড়াতে এমন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

৬ ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি সরিয়ে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ ও সহযোগীরা

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী এই পরিবারটি যেদিন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন, ঠিক সেইদিনই বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন। নাগরিকত্ব ত্যাগ ও স্থায়ী আবাসিক সুবিধা গ্রহণ বাংলাদেশে জটিল প্রক্রিয়া হলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে একই দিন সন্ধ্যায় অতি গোপনে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই কাজটি করা হয়। নাগরিকত্ব ত্যাগ ও আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করতে হলে পুলিশের বিশেষ শাখার ছাড়পত্রসহ বিভিন্ন দপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন হলেও কীভাবে একই দিনে দুটি কাজ সম্পন্ন হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইনজ্ঞরা।

স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদনপত্র অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল আলম এবং আসাদুল আলম মাহির বাংলাদেশে স্থায়ী আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের এই সুবিধা অর্জনের সুযোগ বা প্রয়োজন নেই। নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন বলেই তারা স্থায়ী আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করেন।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিলেও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেতে এস আলম পরিবারের সদস্যরা জনপ্রতি বিনিয়োগ দেখিয়েছেন মাত্র ৭৫ হাজার ডলার।

এস আলম পরিবারের সদস্যদের স্থায়ী বসবাসের পৃথক অনুমোদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘আবেদনকারী স্থায়ী আবাসিক সুবিধা অধিকারের জন্য সনদ প্রদানের জন্য সরকারকে সন্তুষ্ট করেছেন। সেহেতু, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশে নাগরিকত্ব (অস্থায়ী বিধান) অধ্যাদেশ ১৪৯-এর অনুচ্ছেদ ৪এ-তে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এবং ওই অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত ১৯৭৮ সালের বাংলাদেশে নাগরিকত্ব (অস্থায়ী বিধান) অধ্যাদেশের ৪বি অনুযায়ী আবেদনকারীকে স্থায়ী আবাসিক অধিকার প্রদান করা হলো এবং তিনি স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে গণ্য হবেন। বাংলাদেশের বাসিন্দার মতো সব অধিকার, সুযোগ-সুবিধা ও যোগ্যতার অধিকারী হবেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকের মতোই দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকবে। তবে, সরকার কর্তৃক অর্পিত বা পরিত্যক্ত ঘোষিত কোনো সম্পত্তি দাবি করতে পারবে না।’

এতে আরও উল্লেখ রয়েছে, ‘বাংলাদেশে শিল্প বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকৃত অর্থ আবেদনকারী তাহার স্বদেশে অথবা বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোনো দেশে ফেরত বা প্রেরণ করিতে পারবে না, অন্যথায় তার স্থায়ী আবাসিক সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম