Logo
Logo
×

জাতীয়

ধানমণ্ডি লেকে ৩ টন মরা মাছ, দোষীদের শাস্তির দাবি বেলা’র

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:০০ পিএম

ধানমণ্ডি লেকে ৩ টন মরা মাছ, দোষীদের শাস্তির দাবি বেলা’র

রাজধানীর ধানমণ্ডি লেকে মরা মাছ ভেসে ওঠার বিষয়ে রোববার স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব; ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর পক্ষ থেকে।

ওই পত্রে বলা হয়েছে, দেশের রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার অন্যতম প্রধান জলাধার ধানমণ্ডি লেক। ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকার পানি নিষ্কাশন ও অগ্নিনির্বাপণে সর্পিল আকারে প্রবাহিত এ লেকটির অবদান অনস্বীকার্য। লেকটি বয়স্ক নাগরিক, শিশু-কিশোরসহ সকল শ্রেণির নাগরবাসীর প্রাতঃভ্রমণের ও বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এ লেকের রয়েছে নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। লেকটির মালিকানা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের হলেও এর মৎস্য উন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সার্বিক উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। দূষণ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের।  

পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, দেশের অন্যান্য জলাধারের মতো জলাধার বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ডে ও অব্যবস্থাপনায় ধানমণ্ডি লেক আজ অস্তিত্ব সংকটে। গত শুক্রবার ধানমণ্ডি লেকে বিপুল পরিমাণে মাছ মরে ভেসে ওঠার বিষয়টি দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বেলা প্রতিনিধি ধানমণ্ডি লেকের সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে লেক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাগণের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেলা প্রতিনিধি জানতে পারেন লেকটি ইজারা প্রদান করা হয় প্রতি বছর। 

স্থানীয়দের মতে, ইতোমধ্যে ইজারা বাতিল করা হয়েছে। এলাকাবাসী বেলা’র প্রতিনিধিদের জানান, শুক্রবার সকালে লেকের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। দেশে প্রচলিত আইনে জলাধার ইজারা প্রদান করার বিধান না থাকলেও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এ লেকটি ইজারা প্রদান করা হয়েছে মর্মে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, ইজারাদার উক্ত লেকে রুই, কাতলা, বিভিন্ন প্রজাতির কার্প, তেলাপিয়া ইত্যাদি প্রজাতির মাছ চাষ করে থাকেন। 

পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, মরে ভেসে ওঠা আনুমানিক প্রায় ৩ টন মাছ দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা ২ দিন ধরে অপসারণ করছে। মরে ভেসে উঠা এসব মাছ পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে লেক সংলগ্ন এলাকায়। বেলা প্রতিনিধির পরিদর্শনেও পচা মরা মাছের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। বেলার পরিদর্শনে ধানমণ্ডি ৮ নম্বর ব্রিজের নীচে, রাসেল স্কয়ার এলাকায় এবং ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর ব্রিজের নীচে অধিক পরিমাণে মৃত মাছ দেখা যায়। ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় মৃত মাছের গন্ধে নাক চেপে পথচারীদের চলাচল করতে দেখা গেছে। মরা মাছ এভাবে ভেসে ওঠায় হুমকিতে পড়েছে এ লেকের অন্যান্য জীববৈচিত্র্য। দূষণের কবলে পড়েছে লেক সংলগ্ন এলাকার সার্বিক পরিবেশ। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী, বিষ প্রয়োগে মাছ মারা শাস্তিযোগ্য আপরাধ।

ধানমণ্ডি লেকের মাছ মেরে ফেলার ব্যাপারে স্বচ্ছ তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি প্রদানের অনুরোধ জানানো হয় এ পত্রের মাধ্যমে। একইসঙ্গে লেকটিতে ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকাসহ আইনবহির্ভূত সব কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানানো হয়। সেইসঙ্গে লেকটির প্রয়োজনীয় সংস্কারপূর্বক এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় এ পত্রের মাধ্যমে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম