রাতেও সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন হাজার-হাজার আনসার সদস্য। এতে সচিবালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সচিবালয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজার-হাজার আনসার সদস্য সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে করে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকাল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছেন না।

এদিকে রাতেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় অবরুদ্ধ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়েছেন। সচিবালয়ের ভেতরে থাকা ক্যান্টিনগুলো খালি হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সেই সকালে অফিসে এসেছি। এখন রাত সাড়ে ৮টা বাজে। এখনো বাসায় যাওয়ার জন্য বেরই হতে পারিনি। দুপুরে খাবার খাওয়ার পর আর কিছু খাইনি। ক্যান্টিনগুলোও সব ফাঁকা হয়ে গেছে। আমরা অনেক ক্ষুধার্ত।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, এভাবে আন্দোলনের নামে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখার কোনো মানেই হয় না। তাদের দাবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। তাহলে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও কেন অবরুদ্ধ করে রাখল? এমন চিত্র আগে কখনো দেখিনি।

আনসার সদস্যদের বিক্ষোভের কারণে বেশি বিপাকে পড়েছেন নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, বাসায় গিয়ে রান্না করার প্রয়োজন। অনেকের বাসায় ছোট বাচ্চা রয়েছে। তাদের পরিবার চিন্তায় আছে।

এদিকে সন্ধ্যায় সচিবালয়ের পেছনের ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে উঁচু দেয়াল টপকে এপিবিএনের সদস্যসহ কয়েকজনকে বের হতে দেখা গেছে। পরে অবশ্য আনসার সদস্যরা আর কাউকে বের হতে দেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এপিবিএনের একজন সদস্য বলেন, সকাল থেকেই ডিউটি করছি। সারা দিন খাবার খাইনি। এখন বাধ্য হয়ে দেয়াল টপকে বের হবো।

রেজওয়ান নামের এক কর্মচারী বলেন, কখন বের হতে পারব জানি না। আমরা সকাল থেকে বন্দি। ভেতরে পর্যাপ্ত খাবার নেই। বাধ্য হয়ে দেয়াল টপকে বের হবো।

প্রসঙ্গত, চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আজ সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন আনসার সদস্যরা। একপর্যায়ে দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারী আনসারদের একাংশ। তারা সচিবালয়ে তিন নম্বর গেট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ঢুকে পড়েন।

পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তাদের প্রতিনিধিদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে কিছুক্ষণ পরই আবারও আন্দোলন শুরু করেন আনসার সদস্যরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।