শেখ মুজিব ছাড়াও যেসব ক্ষমতাধরদের মূর্তি ভাঙা হয়েছে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪২ এএম
ছবি সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবির মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালানোর পর বিক্ষুব্ধ জনতার দখলে চলে যায় ঢাকার রাজপথ। সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে হাসিনার ওপর ব্যাপক ক্ষোভ দেখায় ছাত্র-জনতা।
তারা গণভবন, সংসদ ভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। একাধিক ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যায়, একপর্যায়ে দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙে আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপিত হিসেবে যাকে ভাবা হয়, সেই ব্যক্তির ভাস্কর্যে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়ার দৃশ্য দেখেছে গোটা বিশ্ব।
শুধু শেখ মুজিবুর রহমান নয়, ইতিহাসে আরও অনেক ব্যক্তির ভাস্কর্য বা মূর্তিকে এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যাদের একটা সময় সেখানকার মানুষ জাতির শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়েছিলেন।
সাদ্দাম হোসেন (ইরাক)
২০০৩ সালে ইরাকে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাদ্দামের পতনের পর ফিরদৌস স্কোয়ারে তার যে বিশাল মূর্তি ছিল, সেটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন ইরাকের মানুষ। মার্কিন সেনাদের সহায়তায় ১২ মিটার উঁচু এ মূর্তি টেনে নামানো হয় তখন।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া)
২০১১ সালে লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের সময় তার মূর্তি ভাঙা হয়। শুধু তাই নয়, গাদ্দাফির মূর্তির মাথা ভেঙে ফেলার পর সেটি পদদলিত করেন হাজার হাজার মানুষ।
ভ্লাদিমির লেনিন (ইউক্রেন ও ইথিওপিয়া )
২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনের খারকিভে ভেঙে ফেলা হয় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা ভ্লাদিমির লেনিনের মূর্তি। প্রায় ৫ হাজার বিক্ষোভকারী লেনিনের একটা মূর্তি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে মাটিতে ফেলে দেন। লেনিনকে রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে ভাবা হয়। একইভাবে ১৯৮৯ সালে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়াতেও ভেঙে ফেলা হয় লেনিনের মূতি।
ফেলিক্স জেরনস্কি (রাশিয়া)
এ তালিকায় রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম গুপ্ত পুলিশ সংস্থা 'চেকা'র প্রতিষ্ঠাতা ফেলিক্স জেরনস্কির নাম। ১৯৯১ সালে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভকে উৎখাতের চেষ্টা করায় ব্যাপক জনরোষের মুখে পড়েন জেরনস্কি। হাজার হাজার মানুষ লুবিয়াঙ্কা স্কয়ারে অবস্থিত কেজিবি ভবনের সামনে জড়ো হয়ে জেরনস্কির মূর্তির গায়ে লিখে দেওয়া হয় ‘খুনি’।
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় জর্জ (যুক্তরাষ্ট্র)
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় নিউইয়র্কে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় জর্জের একটা লোহার মূর্তিও ভেঙে ফেলা হয়েছিল। আমেরিকানরা এ মূর্তিকে ব্রিটিশ অত্যাচারের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করতেন।
মুসোলিনি (১৯৪৫)
১৯৪৫ সালে ইতালির স্বৈরশাসক মুসোলিনির পতন হলে সেই সময় তার মূর্তিরও একই পরিণতি হয়। একসময় সোশ্যালিস্ট পার্টির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন মুসোলিনি, বিদ্রোহের চেতনায় তার শিরায় শিরায় প্রবাহিত। কিন্তু সেই ব্যক্তিই ইতালির একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেন।
পঞ্চম জর্জের মূর্তি (১৯৪৭)
ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পর সরানো হয় পঞ্চম জর্জের মূর্তি। অবশ্য এই মূর্তি ভাঙা হয়নি। ইন্ডিয়া গেটের কাছে যেখানে পঞ্চম জর্জের মূর্তি আগে রাখা ছিল, সেখানেই ২০২২ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি বসানো হয়।