প্রতিবাদী কার্টুনের সমারোহ ‘কার্টুনে বিদ্রোহ’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০৫:১৫ পিএম
বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, দৃক ও ইয়ার্কির সহযোগিতায় রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে চলছে 'কার্টুনে বিদ্রোহ' নামে ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। ছবি: সংগৃহীত
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন কার্টুনিস্টরা। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনকে ব্যবহার করেছেন তারা। কখনো আবার বিপ্লবের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো তাদের তুলির আঁচড়ে অমরত্ব পেয়েছে।
সেসব কার্টুন নিয়ে বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, দৃক ও ইয়ার্কির সহযোগিতায় রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে চলছে 'কার্টুনে বিদ্রোহ' নামে ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।
৮২ জন কার্টুনিস্টের আঁকা প্রায় ১৭৫টি কার্টুনের এই প্রদর্শনী চলবে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দৃক গ্যালারিতে এই ভিন্নধর্মী প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারছেন কার্টুন অনুরাগীরা।
আয়োজকরা এক বিবৃতিতে জানান, দেশের প্রতিটি মানুষ এই মুহূর্তে রাজনীতি সচেতন, প্রতিটি আড্ডা রাজনৈতিক আলাপে মুখর। মানুষ প্রাণ খুলে কথা বলছে, অন্যের মতামত গ্রহণ করছে, উপভোগ করছে বাকস্বাধীনতা। অথচ এই কিছুদিন আগেও দেখা যেত মতপ্রকাশে কী অদ্ভুত সংকোচ। রাজনৈতিক ঘটনা জাতীয় জীবনে ঘটে চলেছিল অহরহ, কিন্তু এ নিয়ে কার্টুন একেবারে হাতেগোনা। যারা করে গেছেন, তাদেরও মাথায় রাখতে হয়েছে অনেক আশঙ্কা, ভীতি।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ঘোষণা উপদেষ্টা আসিফের
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেখা গেছে অভূতপূর্ব এক দৃশ্য। যতই ভয় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা জয় করে জনতা হয়ে উঠছে ততই দুর্দম। আর ভয়কে জয় করলে, মতপ্রকাশে অসংকোচ হয়ে উঠলে কার্টুন কেমন জ্বলে উঠতে পারে, এবার আমরা দেখেছি। প্রথম আর্টওয়ার্ক এসেছে কার্টুনিস্টদের কাছ থেকেই। প্রথিতযশারা তো এঁকেছেনই, প্রাণখুলে তাতে যোগ দিয়েছেন নবীনরা। কেউ প্রকাশ করেছেন ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়ায়, কেউ এঁকেছেন সংবাদমাধ্যমের পাতায়। কেউ নামে এঁকেছেন, কেউ বেনামে এঁকেছেন, অসংখ্য মানুষের শেয়ারে তা ছড়িয়ে গেছে অন্তর্জালে।
‘কার্টুনে বিদ্রোহ’ প্রদর্শনী নিয়ে কার্টুনিস্ট মেহেদী হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একটা সময় আমাদের দেশে কার্টুনের খরা যাচ্ছিল, মানুষ আঁকতে ভয় পেত। তবে এবার তরুণরা সেই ভয় থেকে যেমন বের হয়ে এসেছে, অন্যান্যদেরও বের হয়ে আসতে সাহায্য করেছে। এটা ইতিহাসের একটা বড় মোড় পরিবর্তন, যদিও আল্টিমেট না। এই প্রদর্শনীটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক।’
ইয়ার্কি সম্পাদক সিমু নাসের শিল্পের ভাষায় প্রতিবাদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে বলি, আর্ট-কালচার কী কাজে লাগে? তবে এবার আমরা দেখতে পেলাম যে আর্ট-কালচার কী কাজে লাগে। পুরো আন্দোলনের বড় অংশেই ছিল স্লোগান, গ্রাফিতি, কার্টুন, র্যাপ গান। চারদিকে একটা দারুণ জিনিস হয়ে গেছে। তরুণদের পথ রুদ্ধ করে দিলে তারা যে সব কিছু ভেঙে-চুড়ে এই কাজগুলো করতে পারে, এই কার্টুনগুলো তার বড় প্রমাণ।’