এ রকম দীর্ঘ ও ভারি রাত আসেনি বাংলাদেশের বুকে: ফারুকী

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৯ এএম

ছবি সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে দ্বিতীয় দফা কারফিউ ঘোষণা করেছে সরকার। ৯ দফা দাবির বদলে এখন সরকার পতনের একদফায় রূপ নিয়েছে আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি। রোববার দিনভর সংঘর্ষ এবং প্রাণহানির মাঝে গতরাতকে সবচেয়ে দীর্ঘ ও ভারি বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সোমবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে ফারুকী লেখেন, ‘এ রকম দীর্ঘ ও ভারি রাত আসেনি বাংলাদেশের বুকে। আমি চিন্তিত। চিন্তিত এই প্রজন্মের সাহসী ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে, যারা বাংলাদেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে একটা গণতান্ত্রিক সমাজের দিকে এগিয়ে নিতে চায়।’
শিক্ষার্থীদের একদফা আন্দোলন গোটা জাতি মেনে নিয়েছে, বলছেন ফারুকী। দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
‘গোটা জাতি এসব অচেনা ছেলেমেয়েদের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে কেন জানেন? কারণ তারাও গোপনে এটাই চাইছিল। ফলে এসব মুক্তি সেনার নিরাপত্তা আমাকে কালকে রাতে ঘুমাতে দেয়নি। আমাকে ঘুমাতে দেয়নি সরকার সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও। কোনো নৈরাজ্য আমাদের ভালো কোথাও নেবে না। বাংলাদেশকে একটা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হলে এর চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি আর কিছু হবে না।
চলমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা বলেছেন ফারুকী। এমন প্রক্রিয়া সরকার মেনে নিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিশোধমূলক কোনো কর্মকাণ্ড না করার কথা বলেছেন তিনি।
‘এখন এটা ঠেকানোর উপায় কি? শুভ বুদ্ধির উদয়। সরকার যেটা করতে পারে, সেইফেস্ট এগ্জিট রুট নিয়ে একটা ইনটেরিম বডি’র কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। আর আন্দোলনরত ছাত্র নেতৃত্ব যেটি করতে পারে, এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্র সবাইকে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে শান্তিপূর্ণ কিন্তু সজাগ অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো। সব প্রকার প্রতিশোধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে স্পষ্ট আহ্বান জানানো।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে দেশজুড়ে আবার কারফিউ ঘোষণায় রাস্তায় নেমেছে সেনাবাহিনী— এমন অবস্থায় সেনাবাহিনীকে নিয়ে নিজের প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন জনপ্রিয় এ নির্মাতা।
ফারুকী আরও লেখেন— মিলিটারির উচিত সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রো-অ্যাকটিভ রোল নেওয়া, যাতে সব মত-পথ-ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। তারপর ইনটেরিম সরকার সমাজের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বসে ‘কমপ্লিট রিফর্মের’ কাজে হাত দেওয়া, যাতে বাংলাদেশ আর কখনো এই রকম দুঃশাসনের কবলে না পড়ে।
সবশেষে ফারুকী লেখেন— এর বাইরে কি অন্য কোনো সলিউশন আছে? হয়তো আছে. যেটি আমার মাথায় আসছে না। আমি শুধু আশা নিয়ে তাকিয়ে আছি— আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ব, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, লুটপাট থাকবে না, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে এবং আমাদের চিন্তা সেন্সর করবে না কেউ।
‘এই মুহুর্তে একটাই প্রার্থনা— শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে সংযুক্তি- সেইফ এগ্জিট বলতে সুনির্দিষ্ট অপরাধের বিচার না করার কথা বলিনি। তবে সেই বিচার কোনো মব জাস্টিস না হয়ে হতে হবে ফেয়ার জাস্টিস অ্যাট ফেয়ার কোর্ট’।