Logo
Logo
×

জাতীয়

কোটা আন্দোলন ইস্যুতে গণগ্রেফতার, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো যা বলছে 

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৮ পিএম

কোটা আন্দোলন ইস্যুতে গণগ্রেফতার, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো যা বলছে 

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এনিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সোমবার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানায় সংগঠনগুলো। 

জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক বলেছেন, মহাসচিব অ্যান্তনি গুতেরেস সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হাজার হাজার যুবক এবং বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতারের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

ডুজারিক বলেন, মহাসচিব নতুন করে ছাত্র বিক্ষোভের খবর পেয়েছেন এবং শান্তি ও সংযমের জন্য পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থী মাসরুরের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা মা-ভাইকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

তিনি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রারিক্ত শক্তি প্রয়োগের খবরে তিনি শঙ্কিত। তিনি সব সহিংস ঘটনার দ্রুত, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। 

ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ ঢাকায় এবং নিউইয়র্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরা অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সব চেয়ে বেশি সৈন্য নিয়োগকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মানবাধিকার সমুন্নত রাখবে বলে তারা বিশ্বাস করে।
ডুজারিক জানান, যে জাতিসংঘ লোগোযুক্ত সামরিক যানবাহন রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে সরকারের বক্তব্য তারা আমলে নিয়েছে। তবে তিনি এবিষয়ে তার কয়েক দিন আগের বক্তব্য পুনরায় ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের সৈন্য এবং পুলিশ দিয়ে সাহায্যকারী দেশগুলো কেবল তখনই জাতিসংঘ প্রতীক এবং সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করবে, যখন তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বা জাতিসংঘের রাজনৈতিক মিশনের অংশ হিসাবে কাজ করবে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রনেতা ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদেরকে ‘নির্বিচারে আটক’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। 

সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক স্মৃতি সিং বলেছেন, বাংলাদেশে সপ্তাহজুড়ে ৯ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ‘রাজনৈতিক উদ্দশ্যপ্রণোদিত’।

সরকারকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, এমন কাউকে রুখে দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে ‘গণগ্রেফতার’ ও ‘নির্বিচারে আটক’ করছে কর্তৃপক্ষ। এটি হলো বাংলাদেশের ভয়ের পরিবেশ আরও জোরাল করার হাতিয়ার বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর বল প্রয়োগে নিন্দা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের ঘোষিত শ্যুট অন সাইট নীতি এবং বেআইনি হত্যাকাণ্ডের ঘোষণায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

ইইউ আরও বলেছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঘটা নিয়ম বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা, অত্যাচার, গণগ্রেফতার এবং ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় নিন্দা জানাই। এছাড়া আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের নিহত হওয়া, সহিংসতা, নির্যাতন, গণগ্রেফতার এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষতিসাধন নিয়েও আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। 

আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের অসংখ্য ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। প্রতিবাদকারী, সাংবাদিক, তরুণ এবং শিশুদের গ্রেফতারের ঘটনায় যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।  

প্রসঙ্গত, আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সোমবার পর্যন্ত সারা দেশে দেড়শ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে গত ১৬ই জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২৬৬ জন মানুষ মারা গেছেন বলে দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের করা করা হয়েছে প্রায় ২০০ মামলা। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে দুই লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে, যাদের অধিকাংশই অজ্ঞাত।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম