জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত দাবি, ৭৪ নাগরিকের বিবৃতি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে ঘিরে শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিক হত্যার তদন্ত দাবি করেছেন দেশের ৭৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকরা’।
বিবৃতিদাতারা বলেছেন, আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীসহ শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নিহত, আহত ও নির্যাতিত হওয়ার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হতে হবে। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্তের স্বার্থে তা জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে হওয়া জরুরি। তাই তারা জাতিসংঘকে এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতিতে বলা হয়, গভীরতম বেদনা ও ক্ষোভের সঙ্গে তারা লক্ষ্য করছেন যে, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ১৬ জুলাই থেকে পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল মন্ত্রীর প্ররোচনায় তাদের আশীর্বাদপুষ্ট ছাত্রসংগঠনের সহিংস কর্মীরা নজিরবিহীন দমন–পীড়নের তাণ্ডব চালিয়েছেন। শুরু থেকেই সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও অরাজনৈতিক ছাত্র আন্দোলনকে সরকারি দল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে।
অন্যদিকে বিরোধীপক্ষও ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতির নামে একে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, তারা ছাত্র-জনতা হত্যা ও জনগণের সম্পত্তি বিনষ্টের নাশকতার পেছনে যেকোনো ধরনের অপরাজনীতির নিন্দা করছেন।
বিবৃতিদাতারা বলেন, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রী এবং খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় হতাহতের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। হতাহতের তালিকায় সংবাদকর্মীরাও আছেন।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, এই আন্দোলন চলাকালে নাশকতামূলক তৎপরতার কারণে বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
তারা বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব নাশকতার জন্য যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও সামগ্রিকভাবে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ, শিক্ষামুখী রাখতে কয়েকটি দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে দেশবাসীকে কঠিন আত্মপ্রত্যয়ে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন-
১. সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী
২. হামিদা হোসেন, মানবাধিকারকর্মী
৩. খুশী কবির, মানবাধিকারকর্মী
৪. শাহদীন মালিক, আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ
৫. রাশেদা কে চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী
৬. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, অর্থনীতিবিদ
৭. হোসেন জিল্লুর রহমান, অর্থনীতিবিদ
৮. আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ
৯. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অর্থনীতিবিদ
১০. মেঘনা গুহঠাকুরতা, মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক
১১. জেড আই খান পান্না, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
১২. ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকারকর্মী
১৩. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক
১৪. শিরিন হক, নারী অধিকারকর্মী
১৫. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আইনজীবী
১৬. শামসুল হুদা, মানবাধিকার ও ভূমি অধিকারকর্মী
১৭. বদিউল আলম মজুমদার, গবেষক ও পর্যবেক্ষক
১৮. সারা হোসেন, আইনজীবী
১৯. পারভীন হাসান, অধ্যাপক
২০. গীতি আরা নাসরিন, অধ্যাপক
২১. মো. তানজিমউদ্দিন খান, অধ্যাপক
২২. সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক
২৩. মুশতাক এইচ খান, অধ্যাপক
২৪. মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক
২৫. ফিরদৌস আজিম, অধ্যাপক
২৬. বীনা ডি কস্তা, অধ্যাপক
২৭. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক
২৮. সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক
২৯. রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক
৩০. নোভা আহমেদ, অধ্যাপক
৩১. নাভীদা খান, অধ্যাপক
৩২. স্বপন আদনান, শিক্ষাবিদ
৩৩. দীনা সিদ্দিকী, শিক্ষাবিদ
৩৪. নাসরিন খন্দকার, পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার
৩৫. সামিনা লুৎফা, সহযোগী অধ্যাপক
৩৬. ফারহা তানজিন তিতিল, সহযোগী অধ্যাপক
৩৭. মাইদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক
৩৮. রিজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, সহযোগী অধ্যাপক
৩৯. মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক
৪০. সুব্রত চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
৪১. তবারক হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
৪২. শুভ্র চক্রবর্তী, মানবাধিকারকর্মী
৪৩. শরীফ ভূঁইয়া, আইনজীবী
৪৪. সাইদুর রহমান, আইনজীবী
৪৫. প্রিয়া হাসান চৌধুরী, আইনজীবী
৪৪. শারমিন খান, আইনজীবী
৪৬. নাসের বখতিয়ার, সাবেক ব্যাংকার
৪৭. আবু সাঈদ খান, সাংবাদিক
৪৮. সাঈদা গুলরুখ, সাংবাদিক
৪৯. সালিম সামাদ, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম অধিকারকর্মী
৫০. শারমিন মুরশিদ, মানবাধিকারকর্মী ও পর্যবেক্ষক
৫১. ফস্টিনা পেরেইরা, মানবাধিকারকর্মী
৫২. রুশাদ ফরিদী, মানবাধিকারকর্মী
৫৩. রেজাউল করিম লেলিন, গবেষক ও অধিকারকর্মী
৫৪. নুর খান, মানবাধিকারকর্মী
৫৫. রেজাউল করিম চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী
৫৬. সাদাফ নুর, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী
৫৭. তাসনিম সিরাজ মাহাবুব, মানবাধিকারকর্মী
৫৮. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী
৫৯. রেহেনুমা আহমেদ, লেখক ও গবেষক
৬০. আলতাফ পারভেজ, লেখক ও গবেষক
৬১. আহমেদ স্বপন মাহমুদ, কবি ও লেখক
৬২. জাকির হোসেন, মানবাধিকারকর্মী
৬৩. মাহিন সুলতানা, মানবাধিকারকর্মী
৬৪. রোজিনা বেগম, গবেষক ও অধিকারকর্মী
৬৫. বারিশ হাসান চৌধুরী, গবেষক
৬৬. রেজওয়ান ইসলাম, গবেষক ও অধিকারকর্মী
৬৭. জাহানারা খাতুন, মানবাধিকারকর্মী
৬৮. ফজিলা বানু লিলি, অধিকারকর্মী
৬৯. আরিফা হাফিজ, মানবাধিকারকর্মী
৭০. ইশরাত জাহান প্রাচী, অধিকারকর্মী
৭১. দীপায়ন খীসা, মানবাধিকারকর্মী
৭২. হানা শামস আহমেদ, আদিবাসী অধিকারকর্মী
৭৩. মুক্তশ্রী চাকমা, নারী অধিকারকর্মী ও
৭৪. অরূপ রাহী, সাংস্কৃতিককর্মী