‘রাজাকার স্লোগান’ দিয়ে শিক্ষার্থীরা অন্যায় করেননি: ইউট্যাব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১০:১৭ পিএম
ফাইল ছবি
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে গোটা দেশ যখন উত্তাল ও ঐক্যবদ্ধ তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ উপাধি ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি যে বিবৃতি দিয়েছে তা একপেশে এবং দ্বৈত অবস্থান ও হতাশাজনক বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
রংপুরে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের গুলিতে অধ্যাপক লুৎফুল ইলাহি আহত ও অবরুদ্ধ অবস্থায় অধ্যাপক কামরুল আহসানসহ অনেককে আহত করা এবং ঢাবি শিক্ষার্থীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল যে লিখিত মন্তব্য করেছেন তারও নিন্দা জানায় ইউট্যাব।
বিবৃতিতে বলা হয়- গত রোববার (১৪ জুলাই) ডামি নির্বাচনের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর পরিষ্কার হয়েছে, অবৈধ সরকারের কাছে কোনো যৌক্তিক দাবি গ্রাহ্য নয়। ফলশ্রুতিতে সোমবার কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত কোমলমতি নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র ও ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।
তাদের নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি নারী শিক্ষার্থীরাও। তাদের নির্মমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগত, অছাত্র ও টোকাইদের ঢাবি ক্যাম্পাসে জড়ো করে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
ঢাবিতে ছাত্রলীগের এমন বর্বর ও জঘন্য ঘটনা ঘটলেও ঢাবি শিক্ষক সমিতি কোনো মন্তব্য করেনি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ছিল সেখানে ঢাবি কর্তৃপক্ষ ছিলেন উদাসীন ও নির্বিকার। এমন দ্বৈত অবস্থান লজ্জাজনক।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে ডামি সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিদ্বেষমূলক অত্যন্ত উস্কানিমূলক। আন্দোলনকারী সবাইকে রাজাকারের নাতি-নাতনি হিসেবে তুলনা করে তাদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছেন।
নেতারা বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কখনই মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেননি। বরং তাদের রাজাকারের সঙ্গে তুলনায় করায় তারা নিজেদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিয়েছে। এটি কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করার শামিল হতে পারে না। ঢাবি শিক্ষক সমিতি যে বিশেষ দলের তাবেদারি করে সেটি তাদের বিবৃতির মাধ্যমেই সুস্পষ্ট হয়েছে।
ইউট্যাবের বিবৃতিতে বলা হয়- কোটা আন্দোলন ঘিরে ঢাবি ক্যাম্পাসে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এক্ষেত্রে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অকুণ্ঠ সমর্থন ও কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি।