কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে যা বলছে নিউইয়র্ক টাইমস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩২ পিএম
কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে উত্তাল সারা দেশ। বৃহস্পতিবারের আন্দোলনে পুলিশি বাধা নিয়ে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এবার এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ঢাকার একটি আদালত সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল করার পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ২০১৮ সালে সরকারি আদেশের (পরিপত্র) মাধ্যমে বিলুপ্ত করা হয়েছিল। বুধবার আপিল বিভাগ নতুন রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করলেও বিক্ষোভ থামেনি।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকার প্রবেশ ও প্রস্থান পয়েন্টের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো অবরোধ করে রাখেন। এর ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভের কারণে ঢাকার একমাত্র মেট্রোরেল রুটও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকার শাহবাগে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বড় ধরনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কিছু বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপরও উঠে পড়েছিল।
২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সমন্বয়কের অন্যতম সদস্য আকরাম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, কোটা পদ্ধতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি পান না।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিসহ কোটাধারীদের জন্য ৫০ শতাংশের বেশি সরকারি চাকরি সংরক্ষণ করে। ছাত্রনেতারা বলছেন, এসব কোটা এখন অগ্রহণযোগ্য।
কোটাধারীরা অর্ধেকের বেশি সরকারি চাকরি পাবেন এর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেই আন্দোলনের মুখে কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক বিক্ষোভের পর, বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ঘোষণা করেছিল যে কোটা বাতিল করা হবে এবং মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি প্রদান করা হবে।
ঢাকায় বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২০১৮ সালের প্রতিবাদ সমন্বয়ক আকরাম হোসেন বলেন, এবারের আন্দোলন অনেক বেশি সংগঠিত। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে আয়োজকরা সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিছিল ও অন্যান্য সমাবেশের কথা ছড়িয়ে দিতে ভুয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী ও সিলেট শহরে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন।
ছাত্রনেতারা জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কুমিল্লার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কর্মকর্তারা গুলি ও লাঠিচার্জ করেছে।
বিক্ষোভের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা চাই সরকার সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকুক এবং আমাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক।