ভিন্নমত সমাজ ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১০:৫৮ পিএম
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, ভিন্নমত সমাজ ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সমাজে ভিন্নমত থাকতে পারে, তবে সত্য স্বীকার করতে হবে। সত্য ও সঠিক তথ্যের বিষয়ে সবাইকে একমত হতে হবে। তথ্য যদি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয় তাহলে সেটা সমাজে মঙ্গল বয়ে আনবে না। তথ্য যাচাই-বাছাই করা আমাদের দায়িত্ব।
শনিবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিউশনের কনভেনশন হলে পিস অ্যাম্বাসেডর জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের উদ্যোগে ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের সহযোগিতায় এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমসের অংশীদারত্বে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভিন্নমত থাকা প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা হবে ইতিবাচক। প্রতিদ্বন্দ্বিতা তখনই দ্বন্দ্ব-সংঘাতে পরিণত হয়, যখন নেতিবাচকতা চলে আসে। নিজের সক্ষমতা অর্জন, শ্রম, মেধা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশের জন্ম। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশের জন্ম ও চেতনায় কোনো আপস চলবে না। এখানে সব দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, মৌলবাদী ও উগ্রবাদী অপশক্তিকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে আমরা জায়গা দিতে চাই না। কারণ তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিনষ্ট করে।
দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত প্রায় পাঁচশ পিস অ্যাম্বাসেডরদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বাদশা, অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন, আলহাজ মকবুল হোসেন, হোসায়নুল মাতবর, শাহিদা আখতার, নাসিমা কামাল, মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এদেশ স্বাধীন করে গেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো এ দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলা। কারণ আমাদের মধ্যে মতপথের ভিন্নতা থাকলেও আমাদের সবার পরিচয় হলো আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু এখন বাংলাদেশে একে অপরকে নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি শুরু হয়েছে। সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় না থাকলে কোনো দেশ বেশিদূর এগোতে পারে না।
আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, দিন দিন আমাদের মধ্যে বিভেদ বেড়ে যাচ্ছে। আগে আমরা সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা পার্টি আয়োজন করতাম। তখন সব দলের স্থানীয় নেতারা আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হতেন। কিন্তু একই ধরনের পার্টিতে এখন অনেকেই আসেন না। এমন বৈষম্য বজায় থাকলে সমাজ এগোতে পারে না।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বিভক্ত সমাজে কোনোদিন শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করে না। তাই শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য একটি শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার বিকল্প নেই।
মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল বলেন, আমাদের সমাজে বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বিরাজ করছে। কিন্তু কেন এ দ্বন্দ্ব ও সংঘাত? আমি মনে করি, এর কারণ হলো- বিরাজমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমতা না থাকা, তথ্যের সঠিকতা না থাকা।