আ.লীগ সব সময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৮:১২ পিএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন আওয়ামী লীগের হাত দিয়েই অর্জিত হয়েছে। ৭৫ বছরের কণ্টকাকীর্ণ পথচলায় আওয়ামী লীগ সবসময় অগণতান্ত্রিক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের চক্ষুশূল হয়েছে।
শনিবার দুপুরে বন্দরনগরীতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু‘ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
চট্টগ্রাম ৭ আসনের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খাঁন মার্শাল ল’ জারির পর বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরও জিয়াউর রহমান ও এরশাদ দুই সামরিক স্বৈরশাসকই আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৭ সালেও ভিন্ন খোলসে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন চলেছে। তখন বুদ্ধিজীবী পরিচয় দেওয়া কতিপয় ব্যক্তিকে ভাড়া করে সামনে দিয়ে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসনই চালু করা হয়েছিল। সেই সময় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ বিএনপির দুর্নীতি আর দুঃশাসনের অভিযোগ তুলে যেই শাসক এসেছিল, তারা তো প্রথমেই খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করার কথা। কিন্তু তারা সেটি না করে প্রথমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করেছে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী শক্তির চক্ষুশূল ছিল।
বিএনপির মন্তব্য নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, আর কয়েকটি নবায়ন করা হয়েছে, কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় নাই। আর সমস্ত সমঝোতা স্মারক দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নেতারা গলা ফাটিয়ে বলে যাচ্ছেন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব নাকি ঢাকা কলেজে পড়াতেন, বিএনপির আরও কয়েকজন নেতাসহ ড. মঈন খানও শিক্ষিত। চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারা বিএনপির শিক্ষিত নেতারা কেন অশিক্ষিতের মত কথা বলছেন, সেটি আমার বোধগম্য নয়।
ড. হাছান বলেন, আসলে যাদের নেত্রী বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশ যুক্ত হলে দেশের সমস্ত ‘সিক্রেসি আউট' হয়ে যাবে, তারা কানেক্টিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়। যেমন নেত্রী তেমন তার সভাসদ, সেজন্যই তারা এ সমস্ত আবোল-তাবোল কথা বলছেন, আর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কোনো কোনো পীর সাহেবও দেখছি লাফাচ্ছেন। অথচ গাজায় যেভাবে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে, প্রায় ৩৮ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে লাফাতে দেখি না। বিএনপি আর জামায়াতও এ নিয়ে একটি শব্দ বলেনি।
তিনি বলেন, আমরা ভারতের বুকের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছি, ভুটানের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা চলছে। অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বার্থেই সেই কানেক্টিভিটিকে আমরা আরও বাড়াতে চাই, নেপাল ও ভুটানকেও যুক্ত করতে চাই। কিন্তু বিএনপি সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দীন, আবুল কালাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিত এবং জেলা মহিলা ও যুব আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা সেমিনারে বক্তব্য দেন।