শহিদজননী ও কথাসাহিত্যিক জাহানারা ইমামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৪ সালের আজকের দিনেই দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত জননী ও সংগঠক এই মহীয়সী নারীর নেতৃত্বেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গড়ে উঠেছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে করা সেই আন্দোলনের ফসল হিসাবেই দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে।
১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমির ঘোষণা করলে দেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয়। জাহানার ইমাম হন এর আহ্বায়ক।
জাহানারা ইমামের নেতৃত্বেই এ কমিটি ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ গণ-আদালতের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার করা হয়। ১২ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গণ-আদালতের চেয়ারম্যান শহিদজননী জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন। তার এ প্রতীকী বিচারের পর দেশব্যাপী এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন সরকারের বিরোধিতা, জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি এ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন তার ক্যানসার আরও বেড়ে যায়। আমেরিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালের ৩ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অনন্য দলিল।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে দিনটি উপলক্ষ্যে বুধবার ৩টায় জাতীয় জাদুঘরে জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা, আলোচনাসভা ও জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।