ট্যাক্সের আয়ের চেয়ে তামাকজনিত চিকিৎসা ব্যয় বেশি: ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
ডা. এবিএম আব্দুল্লা। ফাইল ছবি
সরকার তামাক খাত থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ ট্যাক্স পায়, তার থেকে কয়েক গুণ বেশি তামাকজনিত চিকিৎসায় ব্যয় হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, তামাকে ৭ হাজার কেমিক্যাল রয়েছে; যার মধ্যে ন্যূনতম ৭ থেকে ৮টি উপাদান সরাসরি ক্যানসারের জন্য দায়ী।
ম্যাজিস্ট্রেট ও বাবুকে নিয়ে মোবাইল উদ্ধারে যাচ্ছে ডিবি
মঙ্গলবার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে হাসপাতালের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ: সফলতা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. আব্দু্ল্লাহ বলেন, তরুণদের তামাকের প্রতি আসক্ত করতে সিগারেট কোম্পানি চালাকি করে সিঙ্গেল স্টিক সিগারেট বিক্রি করছে। যাতে সহজেই তরুণরা সিগারেট কিনতে পারে। তরুণদের আসক্ত করতে পারলে তারা অনেকদিন ব্যবসা করতে পারবে। তাই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিদ্যমান তামাক আইন সংশোধনের ব্যাপারে আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আইন সংশোধনের ব্যাপারে আগ্রহী। আমি প্রধানমন্ত্রীকে তামাক আইন সংশোধনের ব্যাপারে আবারও বলব।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন মহাসচিব অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত¡ ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহণে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। একই সঙ্গে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, দেশের মানুষকে তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে বিএমএ।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে দেশে অসংক্রামক রোগ যেমন স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, শাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রভৃতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। এই অকালমৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটিএফকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মাহিন মালিক, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল টোব্যাকো ব্রাঞ্চের প্রধান ড. ইন্দু আহলুওয়ালিয়া, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তারেক মেহেদী পারভেজ প্রমুখ।