মিন্টুকে গ্রেফতারের পর কোনো চাপ আছে কিনা, জানালেন ডিবির হারুন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ১১:১০ পিএম
ফাইল ছবি
আনার হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে জানিয়েছে ডিবি। এ মামলায় কোনো ধরনের চাপ নেই এবং অহেতুক কাউকে হয়রানি করা হবে না বলেও জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না এবং কাউকে অযথা ডাকাডাকি করা হবে না। সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা যাকে প্রয়োজন মনে করবে তাকে আদালতের অনুমতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
এমপি আজিম খুন: ডিবির নজরদারিতে আরও ৭ জন
মিন্টুকে গ্রেফতারের পর থেকে ডিবি কোনো চাপে আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর আগেও মতিঝিলের টিপু হত্যা, কামরাঙ্গীচরের শিল্পপতি হত্যা, ফারদিন হত্যাকাণ্ডসহ অনেক হত্যাকাণ্ড ঢাকা শহরে ঘটেছে। ডিবির চৌকশ টিম তদন্ত করে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বের করেছে।
বাংলাদেশের একজন সংসদ-সদস্য কলকাতার মাটিতে খুন হয়েছেন। সেই হত্যাকাণ্ডের ক্লু বের করতে ডিবি পুলিশের টিম রাত-দিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের টিম নেপালে গিয়েছে এবং আমাদের তথ্যের ভিত্তিতে নেপালে সিয়াম গ্রেফতার হয়েছে। এছাড়া কলকাতায় গিয়েও আমরা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি আলামত উদ্ধারে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল কিলার শিমুল ভুঁইয়াসহ আরও অনেককে আমরা গ্রেফতার করেছি।
এর মধ্যে চারজন আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমরা যদি চাপ অনুভব করতাম তাহলে আমাদের এত অ্যাচিভমেন্ট হতো না এই মামলায়। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন কোনো চাপ নেই এই মামলার তদন্তকাজে।
আমাদের প্রতি নির্দেশ হচ্ছে নিরপেক্ষভাবে মামলাটি তদন্ত করা। ডিবির চৌকশ টিম নিরপেক্ষভাবে এ মামলার তদন্তকাজ করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা রাতদিন পরিশ্রম করছে। আরও যে আসামি আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।
মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, মামলার তদন্তকাজ অনেকটা চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে, আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। কিছু কিছু নাম আমরা পেয়েছি তাদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা করছি। এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে আছে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের একটা বন্দিবিনিময় চুক্তি আছে সেহেতু আমরা ভারতীয় পুলিশকে বলেছি যেন তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আমরা টিম নিয়ে গিয়ে কথা বলেছি। এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি শাখার মাধ্যমে আমরা ইন্টারপোলে চিঠি দিয়েছি তার বিষয়ে। শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সবাই কাজ করছি। আরও এক-দুজন আসামি বাকি রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। আশা করছি অতি দ্রুতই মামলাটি নিষ্পত্তির দিকে যেতে পারব।
এমপি আনারের মেয়ে ডরিন ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য কলকাতায় যাওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ভারতীয় পুলিশ দূতাবাসের মাধ্যমে ডরিনকে জানিয়েছে ভারতে যাওয়ার জন্য। ডরিনের সঙ্গে আমারও কথা হয়েছে। ডরিন জানিয়েছে কয়েক দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছেন। তার স্বাস্থ্য ভালো হলে মনে হয় শিগগিরই ভারতে যাবেন।
উল্লেখ্য, এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে ডরিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। এ ছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়।