ঈদের চারদিন পরও ঢিলেঢালাভাবে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। তবে রাজধানীর আশপাশে থাকা কর্মজীবী মানুষ বৃহস্পতিবার অফিস শেষে পুনরায় গ্রামের বাড়িতে গেছেন। শুক্র ও শনিবার পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করে রোববার ফিরবেন অনেকে।
যারা অতিরিক্ত ২-৩ দিন ছুটি নিয়েছিলেন, তারাও ফিরছেন রাজধানীতে। ঢিলেঢালাভাবে গ্রাম ছাড়ার কারণে চোখে পড়ার মতো যাত্রীদের চাপ রাজধানীমুখী ট্রেন, বাস, লঞ্চে দেখা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষ ধীরেসুস্থে ফিরছেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীদের চাপ খুব একটা হচ্ছে না। বিগত সময় একেকটি ট্রেনে ধারণের চেয়ে ২-৩ গুণ যাত্রী এলেও এবার ঈদের পর স্বাভাবিক যাত্রী নিয়ে ট্রেনগুলো স্টেশনে প্রবেশ করছে। একই সময়ে রাজধানী থেকেও ট্রেনে যাত্রীরা গ্রামে যেতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা জহিরুল ইসলাম জানান, পরিবার রেখেই ঢাকায় এসেছেন তিনি। স্ত্রী সন্তানসহ রোববার ঢাকায় আসবে। শুক্রবার এসেছেন একটি বিশেষ কাজে, রাতেই বাসে চট্টগ্রামে ফিরবেন। রোববার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফের ঢাকায় ফিরবেন। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আতিকুল ইসলাম জানান, ট্রেনে ভিড় খুব একটা বেশি নেই। ঈদের পরের এ সময়টুকুতে রংপুর এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনে উপচে পড়া ভিড় থাকত।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে অগ্রিম টিকিটের ঈদফিরতি যাত্রা শুরু হয়েছে। শুক্রবার চাপ কিছুটা বেড়েছে। শনি ও রোববার যাত্রীদের চাপ বাড়বে। এবার ভালোভাবেই যাত্রীরা গন্তব্যে ফিরতে পারছেন। ট্রেনও সময় অনুযায়ী চলাচল করছে। অনেক যাত্রী আবার গ্রামেও ফিরছে বিভিন্ন ট্রেনে করে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৬৮ জোড়া ট্রেন ছেড়ে গেলেও ঈদের দিন একটি মেইল ট্রেন চলেছে। ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করেনি। তবে মঙ্গলবার ঈদের দ্বিতীয় দিন কমলাপুর থেকে দুই-তৃতীয়াংশ ট্রেন চলাচল করেছে।
যাত্রাবাড়ী প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, মাতুয়াইল, শনিরআখড়া যাত্রাবাড়ী ও ঢাকা-মাওয়া সড়কের যাত্রাবাড়ী মোড়ে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে বিভিন্ন জেলার বাস থেকে যাত্রীদের নামতে দেখা যায়। সড়কে যাত্রীর চাপ থাকার কারণে চাকরিজীবী অনেকে স্ত্রী-সন্তানদের গ্রামের বাড়িতে রেখে একাই ফিরেন রাজধানীতে। অনেকে আবার কষ্ট করেই বাড়তি ভাড়া দিয়ে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের সিটের অপেক্ষা করে রাজধানীতে ফিরেছেন।
মিরপুর প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকামুখী মানুষের তেমন চাপ নেই। শুক্রবার সরেজমিন গাবতলী বাসটার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, আমিনবাজার সেতু থেকে টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত বেশির ভাগ রাস্তা ফাঁকা। মাঝেমধ্যে দূরপালার বাস গাবতলীতে ঢুকলেও বেশ কয়েকটি বাসের আসন ফাঁকা দেখা গেছে। গাবতলীর পরিবহণসংলিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে গাবতলীতে।