প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন পেশ
রিমালে ক্ষতি ৭ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিমালে ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।
বিবরণ অনুযায়ী, সাত হাজার ৪৮১ কোটি ৮৩ লাখ ৯ হাজার ২৫২ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। রিমালের প্রভাবে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিতে ৩৫ হাজার ৬০২ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৫৯ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমির ফসল। কৃষির সার্বিক ক্ষতি ৭১২ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬২ টাকা।
পাকা ঘর, আধা পাকা ঘর এবং কাঁচা ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৪৫ হাজার ৫২১টি। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৫৮৩টি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজ ও কালভার্টের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৯৮টি এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ১২৩টি। সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৫১ দশমিক ৯০ কিলোমিটার সড়ক। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৭৬১ কিলোমিটার সড়ক। ইটের খোয়ায় নির্মিত ১২২ কিলোমিটার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৭১৯ কিলোমিটার সড়ক। কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ১৬ কিলোমিটার।
মসজিদ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৩টি, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৯৫৮টি। মন্দির সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি, আংশিক ৫৬১টি। গির্জা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪টি। বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে ২৩২ কিলোমিটার, আংশিক ৪১৩ কিলোমিটার। কৃষিভিত্তিক ৩১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতিসাধিত হয়েছে। অ-কৃষিভিত্তিক ৫২টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
বনাঞ্চল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০৬ হেক্টর জমির। ৩৮ হাজার ৫৯৯ হেক্টর জমির বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকূপ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৪৮টি। আংশিকভাবে ৬ হাজার ৩২৭টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিংড়ি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৩ হেক্টর জমির।
মন্ত্রণালয়ের বিবরণীতে বলা হয়, এ ঘূর্ণিঝড়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ৬১৩টি স্কুল, ৫৬টি কলেজসহ মোট ৬৬৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৩১ কোটি ৭৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, পিটিআই, বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ ৭৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের ৮৮০টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯৮টি ও খুলনা বিভাগের ৩৮৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক এ ক্ষয়ক্ষতির বিবরণীতে উপজেলা ত্রাণ গুদাম-কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্রসহ ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া সুপারিশের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার সেতু বা কালভার্টের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৩০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা। পরিবেশ সুরক্ষায় প্রচলিত ইট ব্যবহার না করে ইউনি ব্লকভিত্তিক রাস্তা নির্মাণ এবং রাস্তার বর্তমান সংখ্যা বাড়িয়ে পরবর্তী বছরে ৫ হাজারে উন্নীত করা।
প্রকল্পের বাইরে আরও ১ হাজার সাইক্লোন শেল্টার ও ৫০০ বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা। দেশের সব মুজিবকেল্লাকে পাকা অবকাঠামোয় রূপান্তর করা। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকদের সুরক্ষায় দেশে ‘শেখ হাসিনা কৃষক শেড’ নির্মাণ করা। হিউম্যানিটারিয়ান স্টেজিং এরিয়া দ্রুত নির্মাণ করা। বজ্রপাত মোকাবিলায় পরিকল্পনা কমিশনে বিবেচনাধীন ডিপিপি দ্রুত অনুমোদন করা এবং ভূমিকম্প মোকাবিলায় পর্যাপ্ত মালামাল ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।