আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। (পুরোনো ছবি)
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছেন।
বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪-এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতের কাছে এ দাবি জানান তিনি।
আদালত দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজলকে আসামিদের অভিযোগ পাঠ করে শুনাতে বলেন।
পিপি ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনকে মামলার ধারা উল্লেখ করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। আপনারা দোষী না নির্দোষ। এসময় কাঠগড়ায় থাকা ড.ইউনূস নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তার সঙ্গে অপর ১৩ আসামিও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেন।
এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ধার্য করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম।
এর আগে গত ২ জুন ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়। পরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১২ জুন দিন ধার্য করেন।
২ জুন আদালতে ঢুকে এজলাসের বেঞ্চে বসেন ড. ইউনূস। এরপর আদালত থেকে ড. ইউনূস ছাড়া বাকি আসামিদের ডগে (কাঠগড়া) যেতে বলা হয়। ড. ইউনূস সবার সঙ্গে লোহা দিয়ে ঘেরা কাঠগড়ায় স্বেচ্ছায় গিয়ে দাঁড়ান। সেখানে তিনি তিন মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরপর বিচারক সবাইকে কাঠগড়া থেকে বের হতে বললে ড. ইউনূস কাঠগড়া থেকে বের হন।
কাঠগড়া থেকে বের হয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘দুটো নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। একটা আমার নামে, আরেকটা গ্রামীণ ব্যাংকের নামে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো নজির নেই যে, এক নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে আরেক নোবেল বিজয়ী মামলা করেছে, দুদকে হাজির হয়েছে। এটা আমাদের কপালে হয়েছে, এটা অভিশাপের একটা অংশ। এই অভিশাপ আমরা বহন করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কোনো নিস্তার নেই, একটার পর একটা চলছে। অভিশপ্ত জীবনের একটা বড় পর্যায়ে পৌঁছে গেছি।’
২০২৩ সালের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।