নির্বাচন নিয়ে দেশে এখনো রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক সংকট দেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলতে পারে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু মৌলিক সমঝোতা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, দেশের সার্বিক নির্বাচন ব্যবস্থার আরও সংস্কার প্রয়োজন। এতে ব্যক্তির গুরুত্ব কমে যাবে, নির্বাচনব্যবস্থা আরও সুসংহত হবে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)’ আয়োজিত ‘আরএফইডি টক’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
আরএফইডি সভাপতি একরামুল হক সায়েমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে সিইসি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সদ্য সমাপ্ত ৪৬৯টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৩৬.৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। বড় একটি রাজনৈতিক দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি এবং ভোটার উপস্থিতি কম ছিল।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার ঘটনার তদন্ত চলছে।
সিইসি বলেন, এনআইডি জালিয়াতির অপরাধ ঘটছে। কোনো না কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা এটি করছে। আমাদেরকে জালিয়াতির তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। সাবেক সেনাপ্রধানের ভাই এবং বঙ্গবন্ধুর খুনির সন্তানদের এনআইডি জালিয়াতির তথ্য পাওয়ার পর আমরা তদন্ত করছি। পুরো সিস্টেমের এক শতাংশ হয়তো এই জালিয়াতিতে যুক্ত। তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব।
দেশের রাজনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জমাট বরফ এখনো গলেনি। সার্বিক পরিবেশ এখনো পুরোপুরি অনুক‚লে হয়ে ওঠেনি। তবুও আমি আশাবাদী সংকট নিরসন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।
নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সমাধান করতে হবে। পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানানোর মাধ্যমে একটি সুস্থ নির্বাচনি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আর যারা নির্বাচিত হবেন তারা সেবার মনোভাব নিয়ে জনগণের কাছে গেলে সংস্কৃতিতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হবে।
জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান প্রয়োগ করে। যারা প্রার্থী তাদের দক্ষতা ও জনসম্পৃক্ততার ওপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে না থাকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়নি। তবে এখানে আমাদের করার কিছুই ছিল না।