তথ্য প্রাপ্তি জনগণের সুযোগ নয় অধিকার : প্রধান তথ্য কমিশনার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক বলেছেন, তথ্য প্রাপ্তি জনগণের সুযোগ নয়, এটি সবার অধিকার। সবাইকে এর চর্চা করতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে সবাই তথ্য দিতে বাধ্য।
যারা তথ্য দিতে বাঁধা দিবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। রোববার রাজধানী আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশন বাংলাদেশ এর সম্মেলন কক্ষে ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ বিষয়ে আয়োজিত সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান। এসময় জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন ও অনলাইনের প্রায় ৬০ জন সাংবাদিক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, ২০০৯ সনে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার তথ্য প্রাপ্তিকে জনগণের সুযোগ নয় অধিকার হিসেবে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। জনগণের প্রত্যাশা পূরণকল্পে স্ব-প্রণোদিত তথ্য প্রকাশ অত্যাবশ্যক। প্রকাশযোগ্য তথ্য ওয়েবসাইটে নিয়মিত হালনাগাদ করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা থাকায় কোনো কর্তৃপক্ষই ভবিষ্যতে ছাড় পাবেন না। এছাড়া নোটিশ বোর্ড, বিল বোর্ড ও বার্ষিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্ব-প্রণোদিত তথ্য প্রকাশ অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ এ উত্তরণের এই সন্ধিক্ষণে তথ্যকে অবারিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। ‘চাইলে তথ্য জনগণ-দিতে বাধ্য প্রশাসন’ এই মন্ত্রকে ভুলে যাওয়ার অবকাশ নেই।
তিনি বলেন, ‘এই আইনটি ১২ বছর আগে পাস করা হলেও এখনও সবার কাছে পৌঁছায়নি। এটি শক্তিশালী আইন; যা সুশাসনের জন্য অপরিহার্য। সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক-বিমা, স্কুলকলেজ, মাদ্রাসা ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এই আইনের আওতায়।
ডক্টর আবদুল মালেক জানান, সারা দেশে তথ্য অধিকার আইনে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নিকট ২০২৩ পর্যন্ত দাখিল করা আবেদনের সংখ্যা এক লাখ ৫৬ হাজার ৬৬৫ টি। বিশ্বে ১৪০ টি দেশে তথ্য অধিকার আইন রয়েছে। জনগণের তথ্য প্রাপ্তি, অভিযোগ নিষ্পত্তি, স্ব-প্রণোদিত তথ্য প্রকাশ, ওয়েবসাইট হালনাগাদ প্রভৃতি বিষয় বিবেচনায় বর্তমানে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ২৭ তম অবস্থানে। তিনি উল্লেখ করেন, পরিসংখ্যান মতে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত কমিশনে প্রায় ৩০ শতাংশ অভিযোগ দায়ের করেছেন সাংবাদিকরা। বিশুদ্ধ তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন তৈরিতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানান প্রধান তথ্য কমিশনার।
কর্মশালায় তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক বলেন, তথ্য প্রাপ্তির আপিল ও অভিযোগ দায়ের, তথ্য না দিলে জরিমানা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিধানসহ, কোন কোন তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয় এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণে অবহিত করেন। তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি তথ্য সংরক্ষণ, নথি বিনষ্টকরণ, তথ্য ব্যবস্থাপনা, স্ব-প্রণোদিত প্রকাশের মাধ্যম প্রভৃতি বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
ঢাকা জার্নালের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা এবং এমআরডিআই এর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান মুকুর এতে বিশেষ রিসোর্স পার্সন হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তথ্য কমিশন বাংলাদেশ এর সচিব জুবাইদা নাসরীনও উপস্থিত ছিলেন।