মালয়েশিয়া থেকে উদ্ধার হলো ধর্মমন্ত্রীর আইফোন: ডিবি হারুন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
জামালপুরে একটি জানাজার নামাজে অংশ নিতে গিয়ে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের মোবাইল ফোন চুরি হয়। প্রায় দেড় মাস পর মালয়েশিয়া থেকে আইফোন ব্র্যান্ডের মোবাইলটি উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে মোবাইল চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত চোর চক্রের মূলহোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গত ৩০ এপ্রিল জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মোশাররফগঞ্জে এক জানাজায় গিয়ে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হকের পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি চুরি যায়। এ ঘটনায় মন্ত্রীর সহকারী একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর থেকে মন্ত্রীর মোবাইল ফোন উদ্ধারে কাজ শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন (উত্তর) বিভাগ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মালয়েশিয়া থেকে আইফোনটি উদ্ধার করা হয়।
হারুন অর রশীদ বলেন, ধর্মমন্ত্রীর ফোন চুরির ঘটনায় মোবাইল ফোন চোর চক্রের হোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই চোর চক্রটি ৮০টি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করে। ঢাকায় কাজ করা চক্রটি কখনো পকেট মারে, কখনো ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে যায়, আবার কখনো ছিনতাই করে। আর ঢাকার বাইরে চক্রের সদস্যরা বড় কোনো সমাবেশ, জানাজা বা জনসমাবেশকে টার্গেট করে চুরি করে। চক্রের কোনো সদস্য চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে অন্য সদস্যরা ভুক্তভোগীকে ঘিরে রেখে তাদের সদস্যদের পালাতে সাহায্য করে। ঢাকাসহ সারা দেশে এই চক্রের ৮০টি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় গ্রেফতার জাকির হোসেন (৪০)।
গ্রেফতার অন্য সদস্যরা হলেন- মাসুদ শরীফ, জিয়াউল মোল্লা জিয়া, রাজিব খান মুন্না, আল আমিন মিয়া, আনোয়ার হোসেন ওরফে সোহেল, রাসেল, খোকন আলী ও বিল্লাল হোসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাই মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
হারুন বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি বা ছিনতাই করে আনা ফোনগুলো জাকিরের কাছে জমা দিত চক্রের সদস্যরা। জাকির দামি মোবাইলগুলো বিদেশে থাকা চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, ভারত ও দুবাইয়ে। বিদেশে পাঠানোর জন্য চোরাই মোবাইল ফোন প্রথমে তারা চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন মার্কেটে থাকা চক্রের সদস্যদের কাছে পাঠাত। পরে সেখান থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পাচার করা হতো।
জামালপুরে জানাজায় যাওয়ার পর তার পকেট থেকে মুন্না নামে চক্রের এক সদস্য মোবাইলটি চুরি করে। এরপর সেটি আসে রাসেলের কাছে। রাসেল ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে বোরহানের কাছে। এরপর সেই মোবাইল কামরুজ্জামান হিরু নামে একজনের কাছে দেয় বোরহান। হিরু মোবাইলটি মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। তাদের গ্রেফতারের পর চক্রের সদস্যরা মালয়েশিয়া থেকে মোবাইলটি ঢাকায় পাঠায়।
মোবাইল ফোন চোর চক্রের সদস্যরা আমলা বা সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টার্গেট করত। এই চক্রটি অন্তত ১০ হাজার মোবাইল ফোন চুরি করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা পুলিশ।