Logo
Logo
×

জাতীয়

আইজিপি হয়েও ‘লাল পাসপোর্ট’ কেন নেননি বেনজীর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম

আইজিপি হয়েও ‘লাল পাসপোর্ট’ কেন নেননি বেনজীর

ফাইল ছবি

২০২০ সালে ৩০তম আইজিপি হিসাবে পুলিশবাহিনীর প্রধান পদে দায়িত্ব নেন বেনজীর। নিয়মানুযায়ী সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসাবে তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি মর্যাদাপূর্ণ লাল পাসপোর্টও নেননি। আইজিপি হয়েও তিনি ফের বেসরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে সাধারণ পাসপোর্টের আবেদন করেন। কিন্তু ততদিনে দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ায় বেনজীরের আবেদন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। 

দেশ ছাড়ার আগে যা যা বিক্রি করলেন বেনজীর

সূত্র জানায়, এ সময় বেনজীর আহমেদ আশ্রয় নেন নজিরবিহীন প্রতারণার। চলাচলে অক্ষম হিসাবে গুরুতর অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে ডিআইপির মোবাইল ইউনিট চেয়ে পাঠান। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়ে ছবি তোলা, আঙুলের ছাপ নেওয়াসহ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। অতিগোপনে করা হয় এসব কাজ। 

২০২০ সালের ৪ মার্চ তার আবেদনপত্র জমা হয়ে যায়। ১ জুন বেনজীরের নামে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হয় (নম্বর বি০০০০২০৯৫)। একই প্রক্রিয়ায় সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিস আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ জোসেফের পাসপোর্ট করা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিথ্যা তথ্যে পাসপোর্ট দেওয়া ছাড়াও বেনজীরের পাসপোর্টে আরও কয়েকটি বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। যেমন: সরকারি চাকরিজীবীদের ৫ বছরের বেশি মেয়াদের পাসপোর্ট দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও তাকে দেওয়া হয়েছে ১০ বছর মেয়াদি। এছাড়া আইজিপির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তার নামে সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যুর আগে বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানানোর কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। 

পাসপোর্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মানুযায়ী যে কোনো সরকারি চাকরিজীবী চাইলে অফিশিয়াল পাসপোর্টের বদলে সাধারণ পাসপোর্ট নিতে পারেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। পেশা হিসাবে সরকারি চাকরিজীবী কথাটি উল্লেখ করতে হয়। সরকারি চাকরি করে কোনোভাবেই বেসরকারি চাকরি বা অন্য কোনো পেশা উল্লেখ করার সুযোগ নেই। 

এছাড়া পুলিশপ্রধানের মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে ‘বেসরকারি চাকরিজীবী’ পরিচয়ে পাসপোর্ট নেওয়া রীতিমতো বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। সূত্র বলছে, সরকারি চাকরি করেও নানা কারণে অনেকে সাধারণ পাসপোর্ট নিয়ে থাকেন। এর একটি বড় কারণ ভিন্ন কোনো দেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার সুবিধা নেওয়া। 

কারণ, সরকারি পাসপোর্ট থাকলে অন্য কোনো দেশে বসবাস বা নাগরিকত্ব গ্রহণ বেশ জটিল। এছাড়া অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের দেশের বাইরে যেতে হলেও বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থেকে বহির্গমনসংক্রান্ত অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু বেসরকারি পাসপোর্টে এসব জটিলতা কম। তাছাড়া সাধারণ পাসপোর্টে বিদেশ গমন অনেকটা বাধাহীন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাসপোর্ট কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, আইজিপি হয়েও বেনজীরের মর্যাদপূর্ণ কূটনৈতিক পাসপোর্ট না নেওয়া অস্বাভাবিক। এর ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। হয়তো ইতোমধ্যে তিনি ভিন্ন কোনো দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও তিনি লাল পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারেননি। এছাড়া যে কোনো সময় দেশ ত্যাগের সুযোগ খোলা রাখতে হয়তো তিনি সাধারণ পাসপোর্ট নেওয়াকে নিরাপদ মনে করেছেন।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম