তানভীর শিমুল ও শিলাস্তির আরও ৮ দিনের রিমান্ড চাইবে ডিবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজনকে প্রথম দফা রিমান্ড শেষে আজ আদালতে তোলা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আরও ৮ দিনের রিমান্ড চাইবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তিনজন হলেন- শিমুল ভূইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভূইয়া ওরফে আমানুল্যা সাইদ, তানভীর ভূইয়া ও শিলাস্তি রহমান।
শুক্রবার ডিবির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহিদুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এমপি আজিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজনের কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তাদেরকে আজ আদালতে তোলা হবে। ৮ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। যে পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়া যাবে সে পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ১২ মে ভারতের পশ্চিবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। ২২ মে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্লাটে এমপি আজিমকে খুন করা হয়েছে।
এই খুনের আলামত সংগ্রহ করতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে একটি টিম ভারত গিয়েছিল। সেখানে আজিমের দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধারসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছে এই টিম।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে আক্তারুজ্জামান শাহীন। এ ছাড়া শিলাস্তি রহমান নামে এক তরুণীও এ ঘটনায় সন্দেহভাজনে তালিকায় আছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিলাস্তিকে হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এরই মধ্যে শিলাস্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ডিবি সূত্র বলছে, শিলাস্তি রহমান এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত অব্যাহত আছে।
কলকাতার একটি সূত্র জানায়, যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে, ১৩ মে সেখানে দুজন পুরুষ ও একজন নারী প্রবেশ করেন। একদিন অবস্থানের পর ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আসেন এক পুরুষ ও এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। ১৩ মে তিনি আমানুল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন।
ভারতের সেই ফ্লাটে শাহীনের সঙ্গে শিলাস্তি, ভিডিওতে যা দেখা গেল
ঢাকার ডিবি সূত্রও বলছে, তাদের ধারণা ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। কারণ তিনি ১৫ মে বিমানে দেশে ফেরেন। তার সঙ্গে দেশে ফেরেন মূল কিলার আমানুল্লাহ।
ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন এমপি আনারকে কলকাতা নিতে এই তরুণীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কারণ সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় শিলাস্তি তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি তলায় অবস্থান করছিলেন। তবে সামনে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তিনি নিচে নেমে আসেন। এরপর লাশ গুমে সহায়তা করেন। আমানুল্লাহ ও শিলাস্তি মিলেই এমপি আনারের টুকরো করা লাশ একটি ট্রলি নিয়ে প্রথমে বের হয়েছিলেন বলে তথ্য রয়েছে।’