৪৬৮ বিঘা জমির মালিক একাই বেনজীরের স্ত্রী জিসান মির্জা!
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও স্ত্রীর জিসান মির্জা। ছবি: সংগৃহীত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ দেখে বিস্মিত হয়েছেন। আরও অবাক হয়েছেন বেনজীরের স্ত্রীর সম্পদ দেখে।
একাধিক কোম্পানি খুলে স্ত্রী জিসান মির্জাকে কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে তার নামে কিনেছেন প্রায় ১৪২ একর জমি (৪৬৮ বিঘা)। এজন্য বেনজীর আহমেদের চেয়ে স্ত্রী ও দুই মেয়ের সম্পদের পরিমাণ অনেক বেশি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের চেয়েও তাদের সম্পদের ফিরিস্তি অনেক বড়। তবে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতে বেনজীর স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে সম্পত্তির পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এ ঘটনা মানতে পারছি না: হারুন
ইতোমধ্যে সন্ধান পাওয়া এসব সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে দুদক কর্মকর্তারা মনে করেন, তাদের পরবর্তী ধাপের অনুসন্ধানে বেনজীর পরিবারের আরও সহায়সম্পত্তি বেরিয়ে আসতে পারে।
এদিকে বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও এক মেয়ের নামে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে একই ভবনে চারটি ফ্ল্যাট খুঁজে পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে তিনটিই বেনজীরের স্ত্রী জিসান মির্জার নামে।
ফ্ল্যাটগুলোর আয়তন মোট ৯ হাজার ১৯২ বর্গফুট। একদিনে পানির দামে এ চার ফ্ল্যাট কেনার ঘটনা নিয়ে খোদ পুলিশ বিভাগেই নানা গুঞ্জন চলছে। ২০২৩ সালের ৫ মার্চ বেনজীর আহমেদ অবসরে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে কেনা এ চারটি ফ্ল্যাটের দাম দেখানো হয় মাত্র ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
দুদক কর্মকর্তারা একদিনে অভিজাত এলাকা গুলশানে ‘পানির দামে’ চার ফ্ল্যাট কেনার তথ্য পেয়ে রীতিমতো হতবাক হয়েছেন। দুটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩৫৩ বর্গফুট, দাম ৫৬ লাখ টাকা করে। বাকি দুই ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ২৪৩ বর্গফুট করে, দাম ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে। র্যানকন আইকন টাওয়ারে কেনা হয়েছে এই ফ্ল্যাট। হিসাব করে দেখা যায়, চারটি ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ২ হাজার ৩৮৩ টাকা দাম দেখিয়ে।
এদিকে জমি ও ফ্ল্যাট ছাড়াও বেনজীর আহমেদ ও স্ত্রী-সন্তানদের নামে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসা করার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র খুঁজে পেয়েছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বেনজীর আহমেদ ও স্ত্রী-সন্তানের নামে থাকা এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ (ক্রোক) ও অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
প্রসঙ্গত, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে এখন পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া ২০৫ একর সম্পদের মধ্যে ১৪২ একর (৪৬৮ বিঘা) রয়েছে স্ত্রী জিসান মির্জার নামে।