নিম্ন আদালতে কালো কোট-গাউন পরা থেকে আপাতত রেহাই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
তাপদাহের মধ্যে দেশের অধস্তন বা নিম্ন আদালতে বিচারক ও আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরার বাধ্যবাধকতা নেই বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গোলাম রব্বানী বলেন, আমি রোববারই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত/ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারক এবং আইনজীবীরা মামলা শুনানির সময় পরিধেয় পোশাক সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের গত ৫ মে জারি করা বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে গত ৪ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তি পুনর্বহাল করা হয়েছে।
দেশের সব অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত/ট্রাইব্যুনালসমূহের বিচারক ও আইনজীবীদের ক্ষেত্রমতো সাদা ফুলশার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরবেন।
‘এক্ষেত্রে কালো কোট এবং গাউন পরিধান করার আবশ্যকতা নেই। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।’
গত এপ্রিলেও তীব্র তাপদাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী শীত ও গরমের জন্য আদালতে পৃথক ‘ড্রেস কোড’ করার আবেদন জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতির কাছে।
এরপর ৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে বলেছিল, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের অধস্তন আদালতে বিচারক ও আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরার আবশ্যকতা নেই। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলেও সেই আদেশে বলা হয়।
দেড় মাস পর গত ১৯ মে আইনজীবীদের আবার কালো কোট ও গাউনে ফিরে যেতে বলা হয়। এরপর আরও তিন মাস কালো কোট ও গাউন ছাড়া আদালতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে গত ২৩ মে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছিল ঢাকা আইনজীবী সমিতি।
সেই চিঠির জবাবে বিচারক ও আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরার বাধ্যবাধকতা তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
কিভাবে এ পোশাক এলো?
বাংলাদেশের আদালতের কার্যক্রম সংক্রান্ত অন্তত তিনটি বিধান বা আচরণবিধিতে এই ‘ড্রেস কোড’র কথা বলা আছে। ফলে এটি নিছক প্রথা নয়।
১৬৮৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশের জন্য আদালতে আইনজীবী ও বিচারকেরা কালো কোট ও গাউন পরা শুরু করেন। এরপর থেকে শোকের এই পোশাক হয়ে যায় আইনজীবী ও বিচারকদের স্থায়ী পরিধেয়।
ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতেও চালু হয় এই প্রথা। ব্রিটিশ শাসন অবসান হলেও কমনওয়েলথভুক্ত প্রায় সব দেশেই এই রীতি রয়ে গেছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের সব দেশেই এই ড্রেস কোড মানার বাধ্যবাধকতা আছে। বিভিন্ন আইন ও রীতিনীতি যুগের প্রয়োজনে নানাভাবে সংশোধন হলেও আইনজীবী ও বিচারকদের পোশাকের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বাংলাদেশের বিধি-বিধানে একজন আইনজীবীকে কালো কোট ও সাদা রঙের গলাবন্ধনী পরার কথা বলা হয়েছে।
এ আইনগুলো হচ্ছে- দ্য সুপ্রিম কোর্ট অববাংলাদেশ (অ্যাপিলেট ডিভিশন) রুলস, দ্য সুপ্রিম কোর্ট অববাংলাদেশ (হাই কোর্ট ডিভিশন), সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস এবং দ্য ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস (প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রসিডিউর অবসাবঅর্ডিনেট কোর্টস)।