পাঠকের চাহিদার সঙ্গে সঠিক সাংবাদিকতা চর্চাই বড় চ্যালেঞ্জ: সাইফুল আলম
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎকর্ষ সাধনের কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেছেন দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম। তিনি বলেছেন, কাজের অভিজ্ঞতা যতই থাকুক, গণমাধ্যমে যে রূপান্তর ঘটছে; সেখানে কত বছর ধরে কাজ করছি, সেটা বড় বিবেচ্য নয়, পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটাই মুখ্য। পাঠক-দর্শকদের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঠিক সাংবাদিকতা চর্চাই এখন বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।
রোববার যুগান্তর কনফারেন্স কক্ষে অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া কর্মীদের জন্য ‘ফ্যাক্ট চেক অ্যান্ড অনলাইন ভেরিফিকেশন কোর্স’ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দৈনিক যুগান্তরের আমন্ত্রণে এ কর্মশালা আয়োজন করে এশিয়ান আমেরিকান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও গুগল নিউজ ইনিশিয়েটিভ। এতে রিসোর্সপারসন ছিলেন এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেক বিষয়ক সম্পাদক কাদরুদ্দিন শিশির। এতে দৈনিক যুগান্তর ডিজিটালের কর্মীরা অংশ নেন।
সাইফুল আলম বলেন, পাঠক-দর্শকের প্রত্যাশা ও চাহিদা যে খাতে বিন্যস্ত হচ্ছে, সেভাবে গণমাধ্যমের রূপ পাল্টাচ্ছে। পাঠক কী চাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারাই এখন গণমাধ্যমের বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, এক সময় প্রিন্ট মিডিয়া নিয়ে পাঠক সন্তুষ্ট ছিল। সেখান থেকে সরে গিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চাহিদা তৈরি হলো। তখন মনে হয়েছিল, তাহলে কি প্রিন্ট মিডিয়া টিকবে না? পরে আবার অনলাইনে পাঠকের চাহিদা তৈরি হলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরাও অনলাইনের দিকে ঝুঁকলাম। এর কিছুদিন পরই সংযুক্ত হলো মাল্টিমিডিয়া। আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে গণমাধ্যমের রূপান্তরের পথেই এগোচ্ছি।
যুগান্তর সম্পাদক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পৃথিবী অগ্রসর হচ্ছে। এ শিল্প বিপ্লবে গণমাধ্যমের অবস্থা কী হবে? আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে, এটাও কিন্তু ভাবার সময় এসেছে। এর জন্য যদি আমরা তৈরি না হই, তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। সবকিছুর পেছনে দরকার মানুষকে সঠিক তথ্য দেওয়া। এর জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।
যুগান্তর অনলাইন ইনচার্জ আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বক্তৃতা করেন-উপসম্পাদক আহমেদ দীপু ও এহসানুল হক, নগর সম্পাদক মিজান মালিক ও প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম বার্তা সম্পাদক জোহায়ের ইবনে কলিম।
আহমেদ দীপু বলেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে যেমন তথ্য পাওয়া সহজ, তেমনি নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করা কঠিন কাজ। নির্ভুল নিউজ না দিতে পারলে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে যায়। অনেক ধরনের তথ্য থেকে সঠিকটা বেছে নেওয়াই গণমাধ্যমকর্মীদের কাজ। এ কারণে প্রায়োগিক প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।
এহসানুল হক বলেন, বর্তমানে অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া মানুষের হাতে হাতে। এত এত মিডিয়ার ভিড়ে সঠিক সংবাদ, ছবি ও ভিডিও দর্শক-পাঠকদের কাছে তুলে ধরাই বড় চ্যালেঞ্জ। ডিজিটাল মিডিয়ার কর্মীরা সেই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়েই পথ চলছে।
মিজান মালিক রিসোর্স পারসন কাদরুদ্দিন শিশিরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতেও আমরা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব।
মাসুদ করিম বলেন, ফ্যাক্ট চেকিং ও অনলাইন ভেরিফিকেশন না জানলে সঠিক সংবাদ, ছবি ও ভিডিও পাঠক-দর্শকদের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে না। এমন প্রশিক্ষণ ডিজিটাল মিডিয়ার কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াবে।
কাদরুদ্দিন শিশির এ কর্মশালায় ইনফরমেশন ডিজঅর্ডার, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিভিন্ন ধরন, হেট স্পিচ, ছবি-ভিডিও যাচাইয়ের বিভিন্ন টুলস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।