Logo
Logo
×

জাতীয়

কাঠগড়ায় হাউমাউ করে কাঁদলেন সেলেস্তি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম

কাঠগড়ায় হাউমাউ করে কাঁদলেন সেলেস্তি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় তিন আসামির আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালত এ আদেশ দেন।

এদিন রিমান্ড শুনানির আগে আদালতের এজলাসে আসামিদের রাখার ডকে উঠানো হয় তিন আসামিকে। এসময় হাউমাউ করে কান্না করতে দেখা যায় সেলেস্তি রহমানকে। রিমান্ড শুনানির একপর্যায়ে একজন আইনজীবী ওকালতনামায় সেলেস্তি রহমানের সই নিতে যান। এ সময় তিনি ওই আইনজীবীকে বলেন, আমি কেন স্বাক্ষর করব? আমি কি আসামি নাকি? 

সেলেস্তি আরও বলেন, আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে, আমি জানতে চাই। আমাকে বলেছে সাক্ষী দিয়ে চলে যাবা। আমি কিছু জানি না। 

আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে জানতে চাই: আদালতে সেলেস্তি

এদিন মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফজুর। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি আসামিদের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 

রিমান্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন, তানভীর, শিমুল ভূঁইয়া ও সেলেস্তি রহমান।

 

এর আগে বৃহস্পতিবার সৈয়দ আমানুল্লাহ, ফয়সাল আলী ও সেলেস্তি রহমানকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, সেলেস্তি এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহীনের গার্লফ্রেন্ড। শাহীন যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন এবং তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রেই থাকে। তবে তিনি মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশে এলে সেলেস্তিকে নিয়ে কলকাতায় প্রমোদভ্রমণে যেতেন। সেখানে কিছুদিন থেকে ফের দেশে চলে আসতেন। তাদের মধ্যে কয়েক বছর ধরেই প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সেলেস্তির আরেক বান্ধবী অরিশাকে নিয়েও একাধিকবার কলকাতা যান আখতারুজ্জামান শাহীন।

জানা যায়, ২০ বছরের তরুণী সেলেস্তি রহমানের বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার পরিবার সেখানেই থাকে। ঢাকার উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। উত্তরাতেই একটি মেস বাসায় তিনি থাকেন। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে চাচ্ছে না গোয়েন্দা পুলিশ। এ বিষয়ে পুলিশের ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলেই তার বিষয়ে জানানো হবে।

সেলেস্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তসংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক উপকমিশনার যুগান্তরকে বলেন, সেলেস্তিকে রহস্যময়ী মনে হচ্ছে। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

ডিবি পুলিশের সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে ৩০ এপ্রিল শাহীন ও আমানুল্লাহর সঙ্গে প্লেনে কলকাতায় যান সেলেস্তি রহমান। কলকাতার নিউটাউনের বহুতল আবাসন সঞ্জীভা গার্ডেনসের যে ফ্ল্যাটে খুন হন আনোয়ারুল আজিম আনার, সেখানেই ছিলেন সেলেস্তি। পরে ১৫ মে হত্যার মূল দায়িত্ব পালনকারী চরমপন্থি নেতা শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহর সঙ্গে একই ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার পর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আটক হন।

কে এই রহস্যময়ী তরুণী সেলেস্তি

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আখতারুজ্জামান শাহীনের ‘গার্লফ্রেন্ড’ সেলেস্তি রহমান সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কলকাতায় শাহীনের ফ্ল্যাটে যখন সংসদ-সদস্য আনারকে খুন করা হয়, তখন সেলেস্তি ওই কক্ষে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের পর ওই কক্ষে যান সেলেস্তি। ব্লিচিং পাউডারের উৎকট গন্ধ পেয়ে এর কারণ অন্যদের কাছে জানতে চান তিনি। তখন হত্যাকারীরা তাকে জানায়, ফ্ল্যাটে একজন মলত্যাগ করেছে। ওই গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে। সংসদ-সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে ওই তরুণীর মাধ্যমে ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলা হয়েছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

প্রসঙ্গত ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে কলকাতার দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া নিউটাউনে রহস্যজনকভাবে খুন হন আনোয়ারুল আজিম আনার। স্নায়ুরোগের চিকিৎসা নিতে তিনি ১২ মে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে কলকাতা যান। কিন্তু পরদিন থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। মূলত সেদিনই (১৩ মে) তাকে হত্যা করা হয়। 

এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসে বুধবার। ওইদিনই রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন (২৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম