জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন। কুমিল্লার বাগিচাগাঁওয়ের বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আত্মহত্যার আগে ফাইরুজ তার এক সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এই নিয়ে চলছে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়।
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক আল আমিন নামে তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন— একজন হয়তো ফাঁস নেওয়ার আগে অনেককেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ফাইরুজ অবন্তিকা; কিন্তু প্রতিক্রিয়া পাবেন হয়তো এবার লাশ হওয়ার পর! আজ ফাইরুজ অবন্তিকা, কাল আপনি নয়তো?
সোহানা শামীম নামে একজন তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন— হালকা চরিত্রের কেউ সুইসাইড করতে পারে না। প্রবল আত্মসম্মান সম্পন্ন মানুষই কেবল বাধ্য হয়ে কখনো এ রকম কাজ করে ফেলে, হোক সে সাদি মহম্মদ বা ফাইরুজ অবন্তিকা। গল্প ভিন্ন, গন্তব্য এক। আমাদের আর কী আরেকটি রাত না হয় এই ভেবে আর ঘুম আসবে না। আবার সব একি হয়ে যাবে। কিন্তু ওরা আর এই ধরায় আসতে পারে না কখনো জানেন তো।
আরও পড়ুন: জগন্নাথের সেই সহকারী প্রক্টরের বিচারের দাবিতে উত্তাল ফেসবুক
আলমগীর চৌধুরী আকাশ নামে একজন মালয়েশিয়ান প্রবাসী তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন— ফাইরুজ অবন্তিকা ক্লাশমেট আম্মান সিদ্দিকী দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে অসংখ্যবার প্রক্টর অফিস ঘুরে নিজের যৌন নিপীড়নকারীর বিচার পায়নি। বরং প্রক্টর অফিস (সহকারী প্রক্টর) থেকে বুলিং ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে, যা তাকে তিলে তিলে এ মৃত্যুকূপের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
দুদিন আগেই যে মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রামে আত্মহত্যা না করার জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছিল আজ সেই কিনা প্ররোচনামূলক আত্মহত্যার স্বীকার হয়েছে।
এ হত্যার বিচার চাই, খুনিদের উপযুক্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো অবন্তিকার এভাবে জীবন দিতে না হয়।
আসমিতা ইসরাত নামে একজন ফেসবুক কমেন্টে লেখেন, কতটা ডিপ্রেশনে গেলে এত স্ট্রং একটা মানুষ যে কিনা অন্যদের আত্মহত্যা করতে নিষেধ করত, সেই গতরাতে এই পথ বেছে নিল।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার বিষয়ে এবার মুখ খুললেন জবি ছাত্রী অবন্তিকার মা
প্রিথা সরকার নামে এক মেয়ে লিখেছেন, অবন্তিকা আপুর মৃত্যুর পেছনের কারণের ভয়াবহতা এখান থেকে একটু হলেও আঁচ করা যায়। নইলে এমন একজন স্ট্রং এবং একটিভ মানুষ এত সহজে ভেঙে পড়তে পারে না। যতবারই তার কথা মনে করছি তার হাস্যোজ্জ্বল, কর্মচঞ্চল চেহারাটাই ভেসে উঠছে।
প্রশাসনের এই অন্যায় ও নির্লিপ্ত আচরণের বিরুদ্ধে সবাই রূখে না দাঁড়ালে ক্ষমতার এ সকল ম্যালপ্র্যাকটিস চলতেই থাকবে এবং আরও কিছু ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ড ঝরে পড়বে। আর যারা ঝরবে না, তারা দিনে দিনে ভোঁতা হয়ে যাবে।