Logo
Logo
×

জাতীয়

‘এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে’, জিম্মি জাহাজ থেকে শেষ বার্তা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৭ এএম

‘এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে’, জিম্মি জাহাজ থেকে শেষ বার্তা

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের ফাইটার হিসেবে কর্মরত আহমেদ মো. সালেহ (৪৮) তার স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে অডিওবার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘একটু আগে সেহরি খেয়েছি। এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে।’

জিম্মি আহমেদ মো. সালেহ নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের মুন্সিবাড়ির মৃত সাখাওয়াত উল্লাহর ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে মো. সালেহ সবার বড়। তার স্ত্রী ও তিন কন্যাসন্তান রয়েছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) বিকালে খবর শুনে আহমেদ মো. সালেহের বাড়িতে তার স্ত্রী, তিন কন্যা ও ভাইবোনরা সবাই কান্নাকাটি করছেন। 

আহমেদ মো. সালেহের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, আমার স্বামীসহ সবার মোবাইল ফোন জলদস্যুরা নিয়ে গেছে। তারা সেহরি খেতে দিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে অডিওবার্তা পাঠাইসে। সেখানে বলেছে, একটু আগে সেহরি খেয়েছি। এখনো অক্ষত আছি, বেঁচে ফিরলে দেখা হবে। আর যোগাযোগ করতে পারব কিনা জানি না। আমার মেয়েদের দিকে নজর রাখিও। আমার জন্য দোয়া কইরো। 

আহমেদ মো. সালেহের মেয়ে তাসফি (১৪) বলেন, আমার বাবা আমাকে কল দেয় না। আমাদের সঙ্গে কথা কয় না। কই পামু তারে। কবে আসবে বাবা? আমার বাবারে আইনা দেন। 

আহমেদ মো. সালেহের ভাই তানজিমুল হাসান ফাহিম বলেন, আমাদের বাবা-মা নেই। আমরা চার ভাই এক বোন। আমার ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি কারও সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা পর্যন্ত বলতেন না। তিনি আমাদের বড় করেছেন। তার অপহরণের খবর পেয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। উনার মতো মানুষ হয় না। যত দ্রুত সম্ভব সরকার সবাইকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক। এটিই আমাদের চাওয়া। 

সালেহের একমাত্র বোন জান্নাতুল ফেরদাউস রানী বলেন, আমার ভাইয়ের তিনটা মেয়ে ও স্ত্রী আছে। তার মেয়ে খালি কান্না করতেছে। আর বাবার খবর জিজ্ঞেস করছে। আমার ভাবি বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। আমার ভাই অত্যন্ত ভালো মানুষ। তার মতো ভালো মানুষ আমি আর দেখি নাই। সব সময় তিনি হাসিমুখে কথা বলতেন। 

আহমেদ মো. সালেহের চাচাতো ভাই মনির হোসেন সোহেল বলেন, সালেহ নামাজি মানুষ। সে প্রচুর দান করত। এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসায় সে প্রতিনিয়ত দান করত। তার অপহরণের খবর শুনে এলাকার সবাই কান্নাকাটি করতেসে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই, তাদের যেন সুস্থভাবে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন। 

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ২৩ জন জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি নাবিকের মধ্যে দুজনের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। অ্যাবল সিম্যান (নাবিক) হিসেবে মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক রাজুর (২৯) বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ ও ফাইটার আহমেদ মো. সালেহের বাড়ি চাটখিলে। তাদের পরিবারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত জানিয়েছি।

জানা গেছে, অপহৃত জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন। যার নাম এমভি আবদুল্লাহ। পণ্যবাহী জাহাজটি কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। গন্তব্য ছিল দুবাই। বুধবার (১৩ মার্চ) মালিকপক্ষ জিম্মি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম