Logo
Logo
×

জাতীয়

হৃদরোগে মৃত্যু রোধ

প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ কমাতে নীতি চান বিশেষজ্ঞরা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ কমাতে নীতি চান বিশেষজ্ঞরা

দেশে প্রতি বছর ২ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এবং প্রায় ২ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণগ্রহণ হৃদরোগ ও স্ট্রোকসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতাগুলোর প্রধান কারণ। যা খাবারে লবণ গ্রহণের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব। ফলে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য সুরক্ষা তথা হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপজনিত মৃত্যু রোধে খাদ্যে সোডিয়াম কমানোর সমন্বিত নীতিমালা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত ‘এনগেজিং স্টেকহোল্ডারস ইন ইম্প্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ থ্রো সোডিয়াম রিডাকশন’ শীর্ষক সভায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনসিডিসি), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল) যৌথভাবে সভাটির আয়োজন করে।

এসময় কার্ডিওভাসকুলার হেলথবিষয়ক বৈশ্বিক চিত্র উপস্থাপন করেন রিজলভ টু সেভ লাইভসের (আরটিএসএল) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ডা. টম ফ্রিইডেন। তিনি বলেন, অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে বিশ্বে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করে। প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর চারটিই ঘটে নিæ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। শুধুমাত্র খাবারে সোডিয়ামের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগসহ উচ্চ রক্তচাপের জটিলতাসমূহ বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ এবং বহু অকালমৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে সরকারের স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ও উলে­খযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সামনে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ৩০ শতাংশ সোডিয়াম গ্রহণ হ্রাসের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আদর্শ সুযোগ রয়েছে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রাম লবণ গ্রহণ করে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত ৫ গ্রামের প্রায় দ্বিগুণ। 

এই লবণের একটি বড় অংশ আসে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবার থেকে। বাংলাদেশে অধিকাংশ প্যাকেটজাত প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিমাত্রায় লবণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা হৃদরোগসহ অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে প্যাকেটজাত খাবারে এ ধরনের অতিরিক্ত লবণ প্রতিরোধে প্যাকেজের সামনে সতর্কতা লেবেল সংযোজন জরুরি। কোন খাবারে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ লবণ ব্যবহার করা যাবে সে সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সরকার খাবারে সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণে একটি জাতীয় কৌশল ও রোডম্যাপ প্রণয়নের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে হৃদরোগসহ উচ্চ রক্তচাপের অন্যান্য জটিলতা প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রতি বছর বহু অকালমৃত্যু হ্রাস পাবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সাধনা ভগওয়াত, রিজলভ টু সেইভ লাইভসের প্রতিনিধি লিন্ডসে স্টিল ও নোরা আব্দেল গাওয়াদ বক্তব্য দেন। সভায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসইটিআই), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক স্কুল অব পাবলিক হেলথের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম