Logo
Logo
×

জাতীয়

‘রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালাতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলতে হয়’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০২:২৮ পিএম

‘রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালাতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলতে হয়’

দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনা করতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।  তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রয়োজন। তার হস্তক্ষেপ না হলে বেকারি শিল্পের মতো রেস্তোরাঁ শিল্পও ধ্বংস হবে।  

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর পল্টনে নিজস্ব ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। 

শুরুতে লিখিত বক্তব্য রাখেন ইমরান হাসান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডে গ্রিনকজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মো. ওসমান গনি, সহসভাপতি শাহ সুলতান খোকন, যুগ্ম মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম। 

এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকায় ৪০টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১২টি  লাইসেন্স থাকার পরও আজ সকালে নবাবী রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলতে হয়।

এ সময় তিনি একটি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, বেইলি রোডের রেস্তোরাঁ, ভবন মালিকসহ সরকারি সব সংস্থা দায়ী। সেই ভবনে কয়েকদিন আগে একটি দুর্ঘটনা ঘটলেও মালিকপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রেস্তোরাঁ ব্যবসার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। সেখানে সব স্টেক হোল্ডার থাকবে। 

তিনি আরও  বলেন, স্থানীয় সরকার যত্রতত্র ট্রেড লাইনসেন্স দিয়ে দিচ্ছে। সঠিকপথে লাইসেন্স না দেওয়ায় অনেকেই টেবিলের নিচ দিয়ে কাজ আদায় করছে।  এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের উদাসীনতাও দায়ী। 

ইমরান হাসান বলেন, বর্তমানে অভিযানের নামে ঢাকা শহরে তাণ্ডব চলছে। সিলিন্ডারের লাইসেন্স চাচ্ছে আমরা কেন লাইসেন্স নেব। এ অবস্থা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমাদের যাতে হয়রানি করা হয়। হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ছে। কে আমাদের অর্থ ফিরিয়ে দেবে। এসব অসৎ অফিসাররা কেন এতদিন ঘুমিয়ে ছিলেন। সব ব্যবসা কয়েকটি করপোরেট ব্যবসায়ীর হাতের কব্জায় নিতে কাজ করছে। 

হাইকোর্ট কী দেখতে পাচ্ছে না আমাদের ওপর জুলুম হচ্ছে, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বর্তমানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আমাদের ওপর জুলুম হচ্ছে তা কী হাইকোর্ট দেখতে পাচ্ছে না? এদেশে প্রধানমন্ত্রী দিকনির্দেশনা না দিলে কোনো কাজ হবে না বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। 

ইমরান হাসান বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ফিতা কাটায় ব্যস্ত। অনেকবার তার সাক্ষাৎ চাওয়া হলেও আমাদের সময় দেননি। আমরা ব্যবসার সব কার্যক্রম এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার জন্য দাবি করে যাচ্ছি কিন্তু সরকারের কোন সহযোগিতা নেই। 

করপোরেট কোম্পানিগুলো এ খাত দখল নিতে চায় অভিযোগ করে ইমরান হাসান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে বড় একটি ষড়যন্ত্র চলছে। বহুজাতিক করপোরেট কোম্পানিগুলো এ খাতটি নিয়ে যেতেই এসব কাজ করছে। তারা চাল থেকে শুরু করে বেকারি ব্যবসা সব কিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যেতে চায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জুলুম করে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করপোরেট কোম্পানিগুলো নিয়ে যেতে চায়। 

বেইলি রোডে আগুনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বৃহস্পতিবার কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে বলে একটি কর্মসূচি নিয়েছে সমিতি। 

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৪ লাখ ৮১ হাজার রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে ৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২ কোটি মানুষ এ পেশার ওপর নির্ভরশীল। হয়রানি না করে টাস্কফোর্স গঠন করে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালু রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘদিন ঘুরেও লাইসেন্স পাওয়া যায় না। কোনো অবৈধ রেস্তোরাঁ নেই। 

তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি সাক্ষাতের সময় দিলে সব সমস্যা নিয়ে কথা বলা হবে। আর যদি সময় না দেন তাহলে সব চাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পাঠিয়ে দেব। তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় প্রায় এক হাজার চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমাদের সমস্যার সমাধানে তারা সময় দেয় না। 
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম