Logo
Logo
×

জাতীয়

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান

রাজউক ফায়ার সার্ভিসের কাজ কি শুধু নোটিশ করা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম

রাজউক ফায়ার সার্ভিসের কাজ কি শুধু নোটিশ করা

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বেইলি রোডের ভবনটিতে বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী মহলের চাপ ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। যে কারণে ভবনটিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও রেস্তোরাঁ পরিচালনা দুটি ভিন্ন ব্যবহার। যেখানে মাত্র একটি সিঁড়ি, এমন একটি ভবনে রেস্তোরাঁ চলতে পারার কথা নয়। তাহলে রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশনের ভূমিকা কি কেবল নোটিশ দেওয়া? দেশে ধারাবাহিক আগুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

রাজধানীর কাওরান বাজার বিটিএমসি ভবনের নিজ কার্যালয়ে রোববার বিকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন মানবাধিবার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, সম্মানিত সদস্য আমিনুল ইসলাম ও ড. তানিয়া হক, সচিব সেবাস্টিন রেমা, পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আশরাফুল আলম প্রমুখ।  

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন রেখে বলেন, যারা প্রভাবশালী, তারা কি এত মানুষের জীবনের চেয়েও প্রভাবশালী? তারা কিভাবে দিনের পর দিন এগুলোর পুনরাবৃত্তি করছেন? এত দুর্ঘটনার পরও কি রাষ্ট্রের টনক নড়বে না?

মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রিনকজি কটেজ ভবনে অগ্নিদগ্ধ ও বিষাক্ত কার্বন মনোঅক্সাইডের ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে ৪৬ মৃত্যুর ঘটনার মধ্য দিয়ে সামগ্রিক গাফিলতির আরেকটি উদাহরণ আবার সামনে এলো। অথচ এ দেশে নগর উন্নয়নের জন্য পৃথক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, রয়েছে সেবাসুবিধা নিশ্চিত করার মতো প্রতিষ্ঠানও। নাগরিক সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এসব প্রতিষ্ঠান কাগজে কলমে বেশ সক্রিয় এবং বেশ কঠোরও। দেশে ভবন নির্মাণ ও ব্যবহারের জন্য আইন আছে, ফায়ার সেফটি সম্পর্কিত আইনও যথেষ্ট রয়েছে। অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে মোট ২২টি আইন এবং হাইকোর্টের একটি জাজমেন্ট রয়েছে। 

তিনি বলেন, কাঠামো প্রকৌশলী ও অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন-বেইলি রোডে ওই ৪৬ মৃত্যু ‘অবহেলাজনিত ধারাবাহিক হত্যার ঘটনা’। কারণ এ ভবনগুলোর জন্য আটটি সরকারি সংস্থার অনুমোদন প্রয়োজন (জেলা প্রশাসন, রাজউক, সিটি করপোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিস্ফোরক অধিদপ্তর)। প্রতিটি সংস্থার বিরুদ্ধে দায়িত্বের অবহেলার কারণে হত্যার অভিযোগ আনা যেতেই পারে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা এতটাই অপরিকল্পিত যে এখানে পুরোপুরি পরিকল্পিত নগরায়ণ সম্ভব নয়। কিন্তু যেটা সম্ভব, সেটা হচ্ছে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন-এজন্য প্রতিটি সংস্থা তার নজরদারি কার্যক্রমগুলো নিশ্চিত করবে। সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ মুখে বললেও সংস্থাগুলো পরিচালনায় বিভিন্ন পর্যায়ে যারা যুক্ত তাদের অনেকে অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। এ ধরনের ঘটনায় জমি বা ভবনের মালিক থেকে শুরু করে সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কারা দায়ী, তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে।

ভবনের মিশ্র ব্যবহার সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও ভাবা দরকার। ভবনে আলো-বাতাস প্রবাহের সুযোগ না রেখে কাচ দিয়ে ঘিরে পুরো ভবনকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিপদকে যেভাবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, সেটা পেশাজীবী, স্থপতি, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদ সবাইকে নতুন করে ভাবতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম