অসংক্রামক রোগ চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে: অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৩ এএম

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশে অনেক সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করা সম্ভব হলেও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ চ্যালেঞ্জ বাড়াচ্ছে। কলেরা, বসন্ত, হাম, রুবেলা, করোনা ভাইরাসের মতো সংক্রামক অনেক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, কিডনি ফেইলিউর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও লিভার ডিজিজের মতো অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। এজন্য প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরের ইমিউনিটি বাড়িয়ে কিভাবে রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেদিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির শুক্রাবাদের ইসলাম টাওয়ারে ‘সাইন্টিফিক হেলথ সেমিনার উইথ ডা. মজিবুল হক; শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে 'অ্যামেরিকান ওয়েলনেস সেন্টার।'
অ্যামেরিকান ওয়েলনেস সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফেনী ৩ আসনের সংসদ সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা ও ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মজিবুল হক।
অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ আরও বলেন, সারা বিশ্বে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ প্রায় ৬৫ শতাংশ। যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই মারা যাচ্ছে। খাদ্যাভাস ও জীবন যাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি রোধ সম্ভব। পাশাপাশি ধূমপান ও তামাকজাতীয় পণ্য সেবন বন্ধ করতে হবে। কারণ ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্যান্সার হয় তামাকের কারণে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কমানো, অলস জীবন-যাপন পরিহারসহ শিশুদের মোবাইল-টিভি আসক্তি কমিয়ে খেলাখুলার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে। ঘরে থাকা নারী-পুরুষদের কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। অস্থিরতা, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপনে গুরুত্ব দিতে হবে। অসুস্থ হয়ে পড়লে ডায়েট, ডিসিপ্লিন ও ড্রাগ এই তিনটা বিষয় মেনে চলতে হবে। না হলে অসংক্রামক রোগব্যাধি রোধ চ্যালেঞ্জ বাড়বে বলে মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।
সেমিনারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, যে দেশে শিশু খাদ্য ও ওষুধে ভেজাল মেশানো হয় সে দেশে সুস্থ থাকা চ্যালেঞ্জ। লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করে হয়ত ভাল থাকা যায়। কিন্তু ভেজাল রোধ করতে পারলে দেশ ও মানুষ বেঁচে যাবে। ভেজাল রোধে সরবারকে ভূমিকা রাখতে হবে।
অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আমরা বেঁচে থাকার জন্য খাই। কিন্তু ধানমন্ডি এলাকাতেই দেখা যায় এক ভবনে এক সঙ্গে ৫-১০টা রেস্তোরা। বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে রেস্তোরায় খেতে গিয়ে ৪৬ জনের প্রাণ গেছে। ধানমন্ডির রেস্তোরাগুলো অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। এগুলো রাত ৯টার মধ্যে বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনে সবাইকে সময়মত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ওষুধ ছাড়া সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে হবে।
সেমিনারের প্রধান আলোচক ছিলেন বিখ্যাত পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক এবং আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টিগ্রেটেড হেলথ এর অধ্যাপক ড. মুজিবল হক। তিনি তার বক্তব্যে প্রাকৃতিক খাদ্যের গুরুত্ব এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। কেমিক্যালমুক্ত খাবার ও ফুড সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক সবাইকে ধন্যবাদ জানান।