নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়ন
২০ কোটি টাকা করে পাবেন সংসদ সদস্যরা
সংসদ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৯ পিএম
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, সংসদ-সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়নের জন্য মানুষের কাছে অনেক অঙ্গীকার করেন, এটাই স্বাভাবিক। স্বাভাবিকভাবে সেসব অঙ্গীকার পূরণ করার জন্য সংসদ-সদস্যদের যেমন আগ্রহ, তেমনি প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে অনুধাবন করেছেন। তিনি প্রতিজন এমপির নির্বাচনি এলাকার জন্য ২০ কোটি টাকা দেওয়ার একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেছেন। এটি চলমান। এ প্রকল্প শেষ হলে বা এমপিদের নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন ও অঙ্গীকার পূরণে আবারও নতুন করে প্রকল্প নেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
রোববার সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এমপিরা নির্বাচনি প্রতিশ্র“তি দেন। তাছাড়া তার এলাকার উন্নয়নে এর আগেও একটা থোক বরাদ্দ থাকত। এখন নতুন সরকার, এ সরকারের আমলে এমপিদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ সরকার দেবে কিনা? এর উত্তরে মন্ত্রী একথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে-আনিসুল ইসলাম : চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, চাঁদা দে, নইলে গুলি-এটি একটি গণমাধ্যমের হেডলাইন। যেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বলা হয়েছে। কিছু ঘটনা তারা লিখেছেন। একটি ঘটনা হচ্ছে, পশ্চিম মেরুল বাড্ডার শিরিন টাওয়ারের গলিতে ফুড কোর্ট নামে একটি ফাস্টফুডের দোকানের সামনে দ্রুতবেগে সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল থেমে যায়। মোটরসাইকেল থেকে ১০-১২ জন নেমে ফাস্টফুডের দোকানে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে এক যুবকের হাতে পিস্তল। দুজনের হাতে ধারালো ছুরি। এরই মধ্যে পিস্তল হাতে থাকা যুবক দোকানের মালিক রায়হানের দিকে এগিয়ে যায়। চ্যাঁচিয়ে বলে, তোকে বলেছি যে ভাই ফোন দিয়েছিল। ১০ লাখ টাকা চেয়েছে। কিছুদিন আগে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে গুলি করে মারা হয়। তার স্ত্রী ডলি একজন কাউন্সিলর, তিনি এখন নিয়মিতভাবে টেলিফোন পান হুমকি দিয়ে যাতে মামলা তুলে ফেলা হয়।
সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, চাঁদা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যখন পরিবহণের ট্রাকগুলো আসে সেখানে চাঁদা দিতে হয়। সেই চাঁদা যোগ হয় দ্রব্যমূল্যে। আপনি একটি বাড়ি করবেন সেখানে বালু কে দেবে, ইট কে সাপ্লাই দেবে, রড কে সাপ্লাই দেবে এগুলোর জন্য দিতে হয় চাঁদা। হয় চাঁদা দিতে হবে, নয়তো তাদের সাপ্লাইয়ের কাজ দিতে হবে। চাঁদাটা ভয়ংকর ব্যাধির আকার ধারণ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল অর্থ ভাগাভাগি আইনের চরম লঙ্ঘন: এর আগে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফরম বিক্রির কোটি কোটি টাকা উপাচার্যসহ শিক্ষক ও একটি সংগঠনের ভাগাভাগি করে নেওয়া আইনের চরম লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম বিক্রি করে এ বছর ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা আয় হয়েছে। সার্ভিস চার্জসহ মোট অর্থ ২৩ কোটি টাকা। গত বছর এ খাতে আয় ছিল ১৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ফরম বিক্রির টাকা উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকরা ভাগবাঁটোয়ারা করে নেন। ছাত্রলীগ অতীতের মতো এবারও ভাগের অংশীদার হতে চায়।
তিনি বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম বিক্রির কোটি কোটি টাকা উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, শিক্ষক ও একটি সংগঠন ভাগাভাগি করে নেবেÑজানি না এ দেশ কীভাবে চলছে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিষয়টি যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে এটা গুরুতর অন্যায়। এটা অপরাধ। এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দেশের মানুষকে জানান।