ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘সন্ত্রাসী দল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।  তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয়, আওয়ামী লীগ সরকারই সন্ত্রাসী দল। লাঠি লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ মারে, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ছাত্রলীগের হাতে পিস্তল, লাঠি, দা তুলে দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, একদিকে টেন্ডারবাজি চলছে, অন্যদিকে মারামারি। সারাদেশে খুন-গুম করে বেড়াচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

সেলিমা রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজকে কথা বলতে পারে না, প্রতিবাদও করতে পারে না। আজকে মহান ভাষা দিবসের মাসেও তারা কোনো কথা বলতে পারছে না। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে কারাগারে গেছেন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। তারা এখনও কারাগারে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার প্রতিহিংসার কারণে সরকার তাকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার ষড়যন্ত্র করছে। আজকে তিনি জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তবুও সরকারের কাছে মাথানত করেননি। গৃহবন্দি থাকার পরও চেয়ারপারসন বলছেন-দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে দেশের কোনো মানুষ ভোট দিতে যায়নি।

সেলিমা রহমান বলেন, সামনে রমজান আসছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ জনগণ চিন্তিত। জিনিসপত্রের দাম আগুন ছোঁয়া। সরকার প্রতিদিন বলছে দাম কমাবে কিন্তু দাম কমবে না। এই সরকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করবে না। কারণ এর সঙ্গে জড়িত সরকার দলীয় লোকজন। এ সময় ছাত্রসমাজ, নারীসমাজসহ দেশবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। ২০০৮ সালে দেশে কোনো নির্বাচন নয়, চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা বসানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা ছিল দেশকে রাজনৈতি শুন্য করা, অর্থনীতিকে ধ্বংস করা। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যতদিন এই সরকার ক্ষমতায় আছে ততদিন দ্রব্যমূল্য কমবে না।

তিনি বলেন, এ সরকার সাংবিধানিক অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার ও সামাজিক অধিকার ধ্বংস করছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতির দল নয়, এরা সন্ত্রাসী দল। স্বাধীন ও সার্বভোমত্ব রক্ষা করতে, মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য পুনরায় আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী দুর্বৃত্তায়নের হাতে থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে কৃষক দলের সহসাধারণ সম্পাদক এম. জাহাঙ্গীর আলম এবং সদস্য সচিব মোফাজ্জল হোসেন হৃদয় সঞ্চালনা করেন। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী, কৃষকদলের সহ-সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ইব্রাহিম, তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।