‘অনৈতিক সুবিধা পেতে’ অভিভাবকদের এসএমএস, শিক্ষামন্ত্রী বিব্রত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
পরীক্ষায় সুবিধা পেতে শিক্ষামন্ত্রীর মোবাইলে ‘কিছু করা যাবে?’ বলে অনুরোধ জানিয়ে এসএমএস পাঠিয়েছেন অনেক অভিভাবক। মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় ‘অনৈতিক সুবিধা পেতে’ এমন কাজ করেন অভিভাবকরা। এতে বিব্রত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, অভিভাবকদের এ ধরনের মানসিকতা ‘দুর্ভাগ্যজনক’।
বৃহস্পতিবার সারা দেশে একযোগে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগের ঘোষণা অনুযায়ী এদিন কেন্দ্র পরিদর্শনে না গিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রিফিংয়ে আসেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী নওফেল বলেন, আমাদের নৈতিকতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? যেখানে মন্ত্রী পর্যায়ে মেসেজ করে বলা হচ্ছে- সন্তানের রোল নম্বর এত, সে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। আপনি কি কিছু করতে পারেন কিনা?
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা লজ্জাজনক বিষয় আমাদের জন্য। এমন নৈতিক অধঃপতন যদি অভিভাবক পর্যায়ে হয়, তাহলে আমরা সন্তানদের কী শিখাব?
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা যেন প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে নৈতিক অবস্থানে আপস না করেন।
প্রশ্ন ফাঁসের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী গত ১০ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এ বছর আমি মোবাইল ফোনে অনেক মেসেজ পেয়েছি। তাদের সন্তান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। মেসেজে লিখেছেন- ‘কিছু কি করা যাবে?’ এমনকি রোল নম্বরও দিয়েছেন।
এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটা গোষ্ঠী পরীক্ষার সময় সরকারের দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে রাজনৈতিক মানসিকতা থেকে অপপ্রপচার করে। আরেকটি গোষ্ঠী প্রতারণা করে, প্রশ্নফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায় করে। অথচ প্রশ্নফাঁস হয়নি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা যে কোনো সময় হতে পারে। আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। আমরা বলছি না যে, কেউ করবে না; কিন্তু করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
সারা দেশের ৩ হাজার ৭শ কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একযোগে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। ১১ শিক্ষাবোর্ডের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছে।
প্রথম দিন এসএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র, দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ এবং এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিলে (ভোকেশনাল) বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা হয়।
কোভিড মহামারি এসএসসি পরীক্ষার সূচি এলোমেলো করে দিয়েছিল। তিন বছর পর মাধ্যমিক পরীক্ষা আবার ফেব্রুয়ারিতে ফিরল।
পরিবর্তন আসতে পারে নতুন শিক্ষাক্রমে
সাধারণত সকাল ১০টা থেকে পাবলিক পরীক্ষাগুলো শুরু হয়। অফিস শুরুর সময়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় চাপে পড়ার বাস্তবতা তুলে ধরে এ সময়সূচি পরিবর্তন করা যায় কিনা তা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান একজন সাংবাদিক।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সময়ের বিষয়ে এবার পরীক্ষা শুরুর আগে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু দুপুরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির বিষয়গুলোর কারণে পরীক্ষার সময় আগের মতোই রাখা হয়েছে।
তবে নতুন কারিকুলামে যখন এসএসসি পরীক্ষা হবে, তখন যে পদ্ধতিতে হবে; সেখানে ‘কিছুটা পরিবর্তন সম্ভব হবে’ বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারে, সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।