ভিকারুননিসা-নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষিকা নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে রায় দ্বিতীয় দফায় পেছাল। 

বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-১২ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে মামলাটি রায়ের জন্য ছিল। তবে এদিনও রায় প্রস্তুত হয়নি, এজন্য রায় পেছাবে বলে জানান আদালত। তবে এখনো তারিখ দেননি আদালত। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

গত ২১ জানুয়ারিও রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ধার্য করা হয়। গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-১২ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এ তারিখ ধার্য করেন। 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর পরীক্ষা চলাকালে অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পান শিক্ষকরা। মোবাইল ফোনে নকল করেছে- এমন অভিযোগে অরিত্রীর মা-বাবাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। দিলীপ অধিকারী তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। অধ্যক্ষের কক্ষে গেলে তিনিও একই রকম আচরণ করেন। এ সময় অরিত্রী দ্রুত অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে শান্তিনগরে বাসায় গিয়ে তিনি দেখেন, অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় স্কুলের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।

ওই ঘটনায় ৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় তার বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 

২০১৯ সালের ২০ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী কামরুল ইসলাম ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শ্রেণিশিক্ষিক হাসনা হেনাকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।

২০১৯ সালের ১০ জুলাই ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখাপ্রধান জিনাত আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। দুই আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে উক্ত ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। 

মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত।