টিআইবির বিবৃতি
আটক মেয়েকে ছাড়িয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এমপির স্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক মেয়েকে প্রভাব খাটিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্যের স্ত্রী।
এ ধরনের ঘটনা জনপ্রতিনিধি ও তাদের স্বজনদের ক্ষমতার অপব্যবহার। ফলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) রোববার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতা কাঠামোর সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধি ও তাদের আত্মীয়স্বজনরা ক্ষমতার অপব্যবহারকে স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করছে, এটি তারই উদাহরণ।
তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান হওয়ার কথা থাকলেও, এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে ক্ষমতাশালীরা চাইলেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারেন। কেননা একই মামলায় আটক অন্য অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ধাপে ধাপে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অন্যায় করা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রথম অপরাধ। এরপর ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে অভিযুক্ত মেয়েকে ছাড়িয়ে নিতে সংসদ সদস্যের স্ত্রী একদিকে যেমন পরীক্ষায় জালিয়াতি করাকে অন্যায় সমর্থন যুগিয়েছেন, তেমনি প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করায় সমানভাবে অপরাধী।
অন্যদিকে, সংসদ সদস্যের স্ত্রীর হস্তক্ষেপ মেনে নিয়ে আইনবহিভর্‚তভাবে প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতরাও একইমাত্রায় আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
জনপ্রতিনিধি ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়নের দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সংসদের অভ্যন্তরে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে কার্যপ্রণালি বিধিতে সুস্পষ্ট বিধি-বিধান রয়েছে।
কিন্তু সংসদের বাইরে তাদের সংযত আচরণ নিশ্চিত ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে কোনো আইন নেই। ২০১০ সালের ১৪ জানুয়ারি নবম জাতীয় সংসদের সংসদ-সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ১৫টি ধারা সংবলিত একটি বেসরকারি বিল সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। নাগরিক সমাজ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হলেও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিলটি পাসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।