মাত্র ২১ বছরে কীভাবে ব্যারিস্টার হলেন, জানালেন বাংলাদেশি এই তরুণ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:২০ পিএম
মাত্র ২১ বছর বয়সে ব্যারিস্টার হয়েছেন গোলাম মোর্শেদ জুনিয়র শান। ছবি: যুগান্তর
ব্যারিস্টার গোলাম মোর্শেদ জুনিয়র শান মাত্র ২১ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যের বিপিপি ইউনিভার্সিটি থেকে ‘মাস্টার্স অফ ল ইন লিগ্যাল প্র্যাকটিস (বার)’ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। তিনি দেশের সর্বকনিষ্ঠ ব্যারিস্টার হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতিও লাভ করেছেন। এর আগে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ বাকিংহ্যাম থেকে এলএলবি অনার্স সম্পন্ন করেন।
নিজের একাগ্রতা, অক্লান্ত পরিশ্রম ও শ্রেষ্ঠত্বের নিরলস সাধনায় সাফল্যের জন্য গত ২৭ জুলাই তাকে দ্য অনারেবল সোসাইটি অফ লিংকন্স ইন-এর বার অফ ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে ডাকা হয়েছিল ব্যারিস্টার শানকে। ল অফ টর্টসে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় মর্যাদাপূর্ণ ‘সেরা পারফর্মার’ অর্জন করেন ব্যারিস্টার শান।
অথচ ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করতে স্বাভাবিকভাবে সময় লাগে ২৮ বছর। ব্যারিস্টার শান কীভাবে এত অল্প সময়ে সম্ভব হলো তা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন যুগান্তরের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মানিক রাইহান বাপ্পী।
যুগান্তর: ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন কখন থেকে ?
ব্যারিস্টার শান: আমার যখন বয়স তিন বছর, তখন যুক্তরাজ্যে বাবা একটা ব্যারিস্টার সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিলেন আমাকে। বাবা ‘বার এট ল’ সার্টিফিকেট গ্রহণের সময় আমাকে সঙ্গে নিয়ে ছবিও তুলেছিলেন। সেই সময়ের স্মৃতিটা আমার সব সময় মনো আলোড়িত করত। আর দেখতাম বাবাকে অনেক মানুষ সম্মান করছে ও ভালোবাসছে। সেই থেকেই ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হয়।
আমি মনে করি, বাবার সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে একটি ছবিই আমাকে ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন সঞ্চারিত করেছে। শুধু তাই নয়, আমাকে পরিশ্রম ও ধৈর্যশীলও হতে শিখিয়েছে।
যুগান্তর: কীভাবে সম্ভব হলো মাত্র ২১ বছর বয়সে?
আরও পড়ুন: ২১ বছর বয়সেই ব্যারিস্টার, কে এই বাংলাদেশি তরুণ?
ব্যারিস্টার শান: বাংলাদেশে যদি কেউ ‘ল’ পড়ে তা হলে তাকে চার বছর লাগে। তবে যুক্তরাজ্যে পড়লে লাগে তিন বছর। তবে আমি ইউনিভার্সিটি অব বাকিংহ্যামে সেম কোর্স দুই বছরে সম্পন্ন করেছি। এতে দুই বছর সেভ হয়েছে। আর এসএসসি ও এইচএসসিতে টাইম সেভ করেছি। তা ছাড়া তিন বছর বয়সেই আমার বাবা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছেন। এতেও দুই বছর সময় সেভ হয়েছে। সব মিলিয়ে আমার শিক্ষাজীবনে ৬-৭ বছর টাইম সেভ হয়েছে।
তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণি পাশ করে এক বছর পরই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এটা নরমালি দেড় থেকে দুবছর লাগে। তার পর এইচএসসিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী দুই থেকে আড়াই বছর লাগে আমি সেটা দেড় বছরে সম্পন্ন করেছি। অনার্সেও দুবছর সেভ করেছি। এর ফলে ২১ বছরেই সম্ভব হয়েছে।
যুগান্তর: সময় গ্যাপে কোর্সগুলো সম্পন্ন করতে সমস্যা হয়নি?
ব্যারিস্টার শান: অদম্য ইচ্ছা ও লক্ষ্য থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। আমার বাবার ইচ্ছা ছিল ২১ বছরের মধ্যে যেন আমার ব্যারিস্টার পড়া সম্পন্ন করি। সে অনুযায়ী যখন যেটা বাবা গাইড লাইন দিতেন, সেটা নিখুঁতভাবে পালনের চেষ্টা করতাম। এ জন্যই হয়তো সব শ্রেণির ধাপগুলো কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছি।
যুগান্তর: আইন পেশায় নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
ব্যারিস্টার শান: আমি মনে করি ভালো আইনজীবী হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হওয়া জরুরি। সততার সঙ্গে আইন পেশায় নিয়োজিত থাকার ইচ্ছা আছে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
যুগান্তর: আপনার মূল্যাবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ব্যারিস্টার শান: আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ।