আমার বাবা পৃথিবীকে বদলাতে চেয়েছেন, এটিই ছিল তার স্বপ্ন: মনিকা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম
‘আমার বাবাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি নির্দোষ এবং নিপীড়িত।’ ড. ইউনূসের কারাদণ্ড নিয়ে ব্রিটিশ ফ্রি-টু-এয়ার পাবলিক ব্রডকাস্ট টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ফোর’ এ এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ড. ইউনূসের মেয়ে মনিকা ইউনূস।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় জামিন আবেদনের আগে মনিকা ইউনূসের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। পরে সেটি রোববার ভিডিও আকারে প্রকাশ করে টেলিভিশন চ্যানেলটি।
এসময় ইউনূস কন্যার কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ড. ইউনূস গরিবদের টাকা চুরি করেছেন?
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ চার আসামির স্থায়ী জামিন
জবাবে মনিকা ইউনূস বলেন, আমার বাবা পৃথিবীকে বদলাতে চেয়েছেন। দারিদ্র্যকে মুছে ফেলতে চেয়েছেন। এটাই ছিল আমার বাবার স্বপ্ন। যে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার পুরো জীবনটাই প্রতিষ্ঠান এবং কর্মীদের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, যে চাকরির পেছনে মানুষ ঘুরবে না, চাকরি মানুষের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মানুষ হলো একজন উদ্যোক্তা।
মনিকা ইউনূস আরও বলেন, বাবার পক্ষে থাকার কারণে তার আরও তিন সহকর্মীকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আদালত কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেননি।
তারা বাবা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বা রাজনৈতিক হুমকির সম্মুখীন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাবা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। একসময় তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন রাজনীতি তার জন্য না। তাই আগামীতেও তার রাজনীতিতে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। তিনি সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন।
মনিকা ইউনূস বলেন, ড. ইউনূস নতুন কিছু আবিষ্কার করেছেন। তিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক। ক্ষুদ্রঋণের পাশাপাশি গৃহঋণ, মৎস্য খামার এবং সেচ ঋণ প্রকল্পসহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করেন।
এর আগে রোববার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন ড. ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ২৫ যুক্তি দেখান তিনি।
গত ১ জানুয়ারি শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় ড. ইউনূসের সর্বোচ্চ ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্যদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর গতকাল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন।