Logo
Logo
×

জাতীয়

চালের বাজারে বিশৃঙ্খলা, করা হলো সতর্ক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:১৫ এএম

চালের বাজারে বিশৃঙ্খলা, করা হলো সতর্ক

হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে তদারকি শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার ঢাকার যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ, খিলগাঁও তালতলা বাজার ও ঠাটারীবাজারে অভিযান চালায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি টিম। 

পরে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. লুৎফর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, চালের বাজারে আমরা বিশৃঙ্খলা পেয়েছি। কম দামে আগের কেনা চাল বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রথমবার তদারকি করে আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। পরে অনিয়ম পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুপুর ১২টায় যাত্রাবাড়ী চালের আড়তে যায় তদারকি টিম। এর নেতৃত্ব দেন উপসচিব মো. লুৎফর রহমান। প্রথমে তারা জনপ্রিয় রাইস এজেন্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে যান। তারা প্রতিষ্ঠানটির টানানো তালিকার সঙ্গে চালের নমুনার মিল আছে কিনা, খতিয়ে দেখেন। এ সময় সব নমুনা চালের মধ্যে নাম ও দাম সংবলিত কাগজ লাগানোর নির্দেশ দেন কর্মকর্তারা।

এই আড়তে প্রতিকেজি আটাশ-১ জাতের চাল ৫৪ টাকা এবং আটাশ-২ চাল ৫১ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছিল। তদারকি কর্মকর্তাদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানের মালিক নুরুল হক জানান, প্রতিকেজি আটাশ-২ জাতের চাল ৪৯ টাকায় কেনা, বিক্রি করছেন ৫১ টাকায়। আর ৫০ টাকায় কেনা আটাশ-১ চাল ৫৪ টাকায় বিক্রি করছেন।

এ সময় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রশ্ন করেন পরিবহণ ব্যয়, শ্রমিকের মজুরি ও মুনাফা যোগ করার পর ক্রয়মূল্যের সঙ্গে আরও ২ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করলেও আটাশ-১ চাল কেন কেজিতে ৪ টাকা বেশিতে বিক্রি করছেন? 

জবাবে আড়ত মালিক দাবি করেন, আটাশ-২ জাতের চাল দ্রুত বিক্রি হলেও আটাশ-১ চাল কম বিক্রি হয়। সেজন্য দাম কিছুটা বেশি। কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির মালিককে আটাশ-১ চালের দাম কেজিতে ১ টাকা কমানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে মূল্যতালিকায় ওই চালটির দাম ৫৪ টাকার পরিবর্তে ৫৩ টাকা লিখতে বলেন। আড়তটির একজন কর্মচারী সঙ্গে সঙ্গে তালিকাটি সংশোধন করেন।

বাজার তদারকি দলের কর্মকর্তারা এদিন মা-মণি রাইস এজেন্সি, দিদার রাইস এজেন্সি, আহম্মেদ ট্রেডার্স পরিদর্শন করে। তারা দেখতে পান দিদার রাইস এজেন্সি এরফান অটো রাইস মিলের মিনিকেট চাল ৬৯ টাকা কেজিদরে বিক্রি করছে। এ সময় চাল কেনার চালান দেখতে চান কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার রবিউল হোসেন চালান বের করে দেখান। এতে দেখা যায়, ১৫ জানুয়ারি ৬৫ টাকা কেজি দরে চাল কেনা হয়েছে।

ম্যানেজার জানান, সেদিন ২৮০ বস্তা চাল কিনতে ২২ হাজার ৫০০ টাকা ট্রাক ভাড়া এবং শ্রমিকদের ৩ হাজার ৮০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়েছে। তাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চাল আনতে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালে খরচ পড়েছে ৯১ টাকা ৩৫ পয়সা।

তখন আগের চালান দেখতে চান কর্মকর্তারা। ম্যানেজার তা দেখাতে গড়িমসি করেন। পরে কর্মকর্তারা বলেন, ১৫ জানুয়ারির আগের চালানের চাল যদি গুদামে পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এরপর ম্যানেজার ড্রয়ার থেকে চালান বের করেন। তাতে দেখা যায়, চাল কেনা হয়েছে ৬১ টাকা কেজি দরে। তখন কর্মকর্তারা ম্যানেজারকে মৌখিকভাবে সতর্ক করে মিনিকেট চালের দাম ৬৯ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৫ টাকা করতে বলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তালিকাও সংশোধন করার নির্দেশ দেন কর্মকর্তারা। এরপরই তালিকা সংশোধন করেন দিদার রাইস এজেন্সির কর্মচারীরা।

সোয়া একটার দিকে যাত্রাবাড়ী চালের আড়তে তদারকি শেষ করে কর্মকর্তারা চলে যান। এরপর যাত্রাবাড়ী চাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মঞ্জুর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, চালের মোকামে আগুন। ফলে এখানেও দাম বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। মোকামে দাম কমলে এখানেও কমে যাবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম