Logo
Logo
×

জাতীয়

খতনা করাতে এসে শিশুর মৃত্যু: ইউনাইটেডের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম

খতনা করাতে এসে শিশুর মৃত্যু: ইউনাইটেডের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে এসে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। 

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার সাব্বিরকে ১নং, ডা. তাসনুভা মেহজাবিনকে ২নং আসামি এবং ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অন্যান্য পরিচালক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করা হয়। 

মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা করেন।

এর আগে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্ত ও এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

জনস্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পরিবারের পক্ষে এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম রিটটি করেন। রিটে এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত ডাক্তারদের সনদ বাতিল চাওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে হাসপাতালেরও নিবন্ধন বাতিলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি তিনি নিজে নিশ্চিত করেন।

সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে ভর্তি হয়ে টানা সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার মধ্যরাতে আয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সন্তান হারানোর শোকে পাগলপ্রায় আয়ানের পরিবার।

গত ৩১ ডিসেম্বর আনন্দ নিয়েই রাজধানীর সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। অনুমতি ছাড়াই ৫ বছরের শিশু আয়ানকে ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে সুন্নতে খতনা করান চিকিৎসক। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি তার।

স্বজনরা জানান, আয়ানের সুন্নতে খতনার দিন অপারেশন থিয়েটারে ওই মেডিকেল কলেজের ৪০ থেকে ৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক ভেতরে ছিলেন।

আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক আমাদের ডেকে বলেন যে, আয়ান আর দুনিয়াতে নেই। তারা তড়িঘড়ি করে আমাদের বের করে দেন।

আয়ানের পরিবারের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময় এমন ঘটনার পর অবস্থা বেগতিক দেখে সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ থেকে পাঠানো হয় গুলশান-২ ইউনাইটেড হাসপাতালে। এমনকি প্রথমে ১০ হাজার টাকার প্যাকেজে অপারেশনের কথা থাকলেও বিল ধরানো হয় প্রায় ছয় লাখ টাকা।

আয়ানের চাচা জামিল খান বলেন, আয়ান যদি দুনিয়াতে থাকত, তবে পুরো টাকাই নিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখনো তারা আমাদের কাছে এ বিলটাই চাচ্ছে। 

তারা বলছেন, এখন আপনারা চলে যান, বিলটা পরিশোধের জন্য পরে এসে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

আয়ানের দাদা আব্দুস সালাম কবির বলেন, খতনার কাজ করেছেন ডাক্তার মেহেরজেবিন। অ্যানেস্থেসিয়া বেশি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে এক ঘণ্টা ক্লাস নেওয়াতে আমার নাতি এভাবে মারা গেল।

আয়ানের মামা রাসেল বলেন, ডাক্তার কী ওষুধ ব্যবহার করেছেন, সেসব কিছু লিখা আছে। ফাইলটা এখানে নিয়ে এসেছি কিন্তু আজকে যখন ওই ফাইলটা চাইলাম, তখন সেটা দেখছি গায়েব করে ফেলেছে।

অভিযোগ এড়িয়ে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় চাপাচ্ছে সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজের ওপর। গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালের নন-মেডিকেল ডিউটি ম্যানেজার সানাউল্লাহ কবির বলেন, প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনাসহ পুরো প্রক্রিয়াতেই দুই প্রতিষ্ঠান আলাদা।

এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় অভিযোগ করেছে আয়ানের পরিবার।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম