অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধের জন্য বর্তমান সরকার অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যন্স সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান। এর আগে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নিচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার রোধকল্পে বর্তমান সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। এ আইনের যথাযথ ও কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো আপসের সুযোগ নেই। 

মন্ত্রী বলেন, গ্রামপর্যায়ে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু ফার্মেসি অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার করছে। আইনানুগভাবে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধই শুধু না- মানবস্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর সেটি নিয়ে সরকার কাজ করছে। 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন, বাংলাদেশে এফএও-একটাডের কান্ট্রি লিড এরিক ব্রাম, এফএও-একটাডের জ্যেষ্ঠ কারিগরি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার কনসালটেন্ট নূর ই আলম সিদ্দিকী, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফ্লেমিং ফান্ড কান্ট্রি গ্র্যান্টের টিম লিড ডা. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ। 

স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। প্রাণিস্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যন্স রোধ বিষয়ে সেমিনার পেপার উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (হিসাব, বাজেট ও অডিট) ডা. আবু সুফিয়ান, মানবস্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যন্স রোধ বিষয়ে সেমিনার পেপার উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. অনিন্দ্য রহমান। 

তিনি বলেন, শুধু মানুষের জন্যই নয়, প্রাণীর চিকিৎসাব্যবস্থা অত্যাধুনিক করার জন্য তার নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। গবেষণাগার স্থাপন, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যবরেটরি তৈরি করা এবং প্রাণিচিকিৎসা ব্যবস্থার সুফল গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক অর্থাৎ ভ্রাম্যমাণ প্রাণী হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এক সময় মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন না করার কারণে সরকার বিপুল সংখ্যক ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করেছে। ওষুধে ভেজাল দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কারণ মানুষের চিকিৎসা ও বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধে ভেজাল দেওয়ার ক্ষেত্রে আপস করা যায় না। বর্তমানে দেশে তৈরি হওয়া অনেক ওষুধ গুণগত মানসম্পন্ন হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখনো বড় বড় কোম্পানির ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য সরকার নজরদারি করছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।