ইশ, চোখের পাতা ফেলতেই গাড়িটা (মেট্রোরেল) চলে গেল। মোবাইলটা বাটনের, দামি মোবাইল থাকলে ছবি তুলে রাখতাম। ওই গাড়িতে প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। গাড়িটা যদি আরও আস্তে আস্তে চলত, তাহলে সবাই মনটা ভরে দেখতে পারতো।
কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক মামুন মিয়া। তখন ঘড়ির কাটায় দুপুর ২টা ৪৭ মিনিট। রাজধানীর হাইকোর্ট মোড়ে দাঁড়িয়ে মেট্রোরেল দেখছিলেন মামুন। তার মাথার ওপর দিয়ে ট্রেনটি গতি নিয়ে মতিঝিলের দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় মেট্রোরেলের দুপাশে ছিল শত শত উৎসুক মানুষ।
পুরান ঢাকার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন খোরশেদ আলম মোল্লা। সচিবালয় সড়কের পাশে (জাতীয় প্রেস ক্লাব সংলগ্ন সড়ক) দাঁড়িয়ে মেট্রোরেল দেখছিলেন তিনি। বললেন, দুপুর থেকেই ওখানে দাঁড়িয়েছিলেন। কখন প্রধানমন্ত্রীসহ ট্রেনটি এ স্টেশন (বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশন) হয়ে মতিঝিল যাবে। কিন্তু চোখের পাতা ফেলতে না ফেলতেই ট্রেনটি চলে গেল। মাত্র ১-২ সেকেন্ডের ঝলক দিয়ে গেল। শুধু এক ঝলক দেখতে পেলাম।
এদিকে মেট্রোরেল ঘিরে আকাশে উড়ছিল একাধিক হেলিকপ্টার। শূন্যে টহল দিচ্ছিল। সাধারণ মানুষ একবার হেলিকপ্টার আবার মেট্রোলাইনের দিকে তাকাচ্ছিল। নিচে চলছে দলীয় সমর্থকদের স্লোগান পর স্লোগান।
অপরদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচিবালয় স্টেশনের প্রবেশ সিঁড়ি ঘিরে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়। সাধারণ মানুষ বার বার পুলিশের কাছে অনুরোধ করছিল, সিঁড়ি দিয়ে তাদের যেন উপরে উঠতে দেয়। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে সেই অনুরোধ রাখতে পারেনি পুলিশ।
মধ্যবয়সি শামসুন্নাহার, থাকেন সেগুন বাগিচায়। সিড়ির পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, উপরে উঠতে পারলে আরও ভালো করে দেখতে পারতাম। তবে মেট্রোরেল করেই মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে যাব। মেয়ে উত্তরা থাকেন। সেগুনবাগিচা থেকে যাব উত্তরায়, লিফটতো আছেই।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন সাংবাদিকদের একটি দল। তারা ট্রেনটি সচিবালয় অতিক্রম করতেই স্লোগান ধরেন, ‘জয় শেখ হাসিনা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা তোমায় শুভেচ্ছা, অভিনন্দন’।
সিনিয়র সাংবাদিক ওবায়দুল হক খান জানান, আমাদের চোখের সামনে দিয়ে স্বপ্নের মেট্রোরেলটি চলে গেল। আমাদের আস্থা ও আশার একমাত্র নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই ট্রেনে ছিলেন। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে হাত নেড়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।